নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নিজস্ব কোন টেকনোলজিস্ট নেই। খালি প্যাডে আগে থেকেই সরকারী হাসপাতালের এক ল্যাব টেকনোলজিস্টের স্বাক্ষর করা থাকে। ওই প্যাডে প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে শত শত ভুল রিপোর্ট। ঠকছে রোগিরা। খোদ ল্যাবের লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে দেড় বছর আগে। পরীক্ষাগারে ব্যবহার করা হয় অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি ওষুধ। সব মিলিয়ে কক্সবাজারে রোগ নির্ণয়ে জালিয়াতির কারখানায় পরিণত হয়েছে ‘শেভরণ’ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরী। শনিবার সন্ধ্যায় শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরীতে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোগিদের সাথে প্রতারণা ও নানা অপরাধ ধরা পড়ায় শেভরণ কর্তৃপক্ষকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ল্যাবটি। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম শেখ ও ফারজাহা প্রিয়াঙ্কা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাসুম উদ দোলা। সেলিম শেখ বলেন, শেভরণের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ। নিজস্ব কোন টেকনোলজিস্ট নেই। অন্যজনের নামে স্বাক্ষর করা প্যাডে রিপোর্ট গুলো দেওয়া হয়। রোগ নির্ণয়ে মারাত্মক প্রতারণা করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিনিয়ত মানুষ ঠকছে। একজনের রিপোর্ট অন্যজনের নামে চলে যাচ্ছে। পরে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয় এবং বন্ধ করেও দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ক্লিনিক্যাল ল্যাব চালানোর লাইসেন্স ও নিবন্ধনভুক্ত টেকনোলজিস্ট না আনা পর্যন্ত শেভরণ খোলে দেওয়া হবে না। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, শেভরণ দীর্ঘদিন ধরে রোগিদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। কয়েকমাস আগেও র্যাবের সাঁড়াশি অভিযানে এই ক্লিনিক্যাল ল্যাবটেরীকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। শেভরণে রোগ নির্ণয়ের জন্য নিজস্ব কোন টেকনোলজিস্ট নেই। অদক্ষ টেকনোলজিস্টদের দিয়ে এই ল্যাবটি চালানো হয়। রিপোর্টের প্যাডে স্বাক্ষর করা থাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সরকারী টেকনোলজিস্ট ইলিয়াছ আহমেদ খানের। অভিযোগ উঠেছে, অদক্ষ টেকনোলজিস্টরা টেস্ট গুলো করে নির্ধারিত প্যাডে প্রিন্ট করে রোগির স্বজনের কাছে হস্তান্তর করে। এর ফলে বেশির ভাগই ভুল রিপোর্ট তৈরী হচ্ছে। আর রোগ নিরাময়ের বিপরীতে আরও জটিল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় অনুমোদনহীন বিদেশি ওষুধ। ২০১৭ সালের জুন মাসে শেভরণের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অকেজো যন্ত্রপাতি দিয়ে ল্যাব চালানোর কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শেভরণকে আর অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু তারপরও দিব্যি কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কক্সবাজারের শেভরণ হলো চট্টগ্রাম শেভরণের শাখা। এখানে পরিচালনা করেন ডা. বশিরের নেতৃত্বে কয়েকজন চিকিৎসক। নানা অপকর্মে নেতৃত্ব দেন ম্যানেজার সদীপ শর্মা ও বাহারছড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি।
0 মন্তব্যসমূহ