মোহাম্মদ এরশাদঃ নাগরিকদের জন্য ২২ টি সুবিধামূলক অঙ্গিকার রেখে ৩৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেন।
প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী অধিকার, দূর্নীতি নির্মূল, ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ ১৬টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
১৫ বছরে দেশি-বিদেশি ঋণ শূন্যের কোটায় আনা, ২০ পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্য কমানো, আয়কর ও আমদানি-রফতানি শুল্ক কমানোসহ ইশতেহারের ৩য় দফায় ২২ টি নাগরিক সুবিধার কথা বলা হয়েছে
নাগরিক সুবিধায় যেসব অঙ্গিকার করা হয়েছে:
১.খাদ্যমূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
২. শিল্পন্নোয়নে জ্বালানী তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ৩০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
৩. রিক্সা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ির লাইসেন্স ফি মওকুফ করা হবে।
৪. বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস সহ সকল গণপরিবহনের লাইসেন্স ফি অর্ধেক রাখা হবে।
৫. জমির খাজনা, হোল্ডিং ট্যাক্স ও টোল ৩০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
৬. কৃষকদের জন্য অর্ধেক মূল্যে সার-বীজ দেয়া হবে।
৭. শ্রমিকদের বেতন দ্বিগুণ করা হবে।
৮. চিকিৎসা সেবায় ৫০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
৯. পরিবহণ ভাড়া ৩০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
১০. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হবে।
১১. শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্স সেভিং ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
১২. মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
১৩. মন্দির, গির্জা সহ সকল ধর্মী প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
১৪. আয়কর ও ভ্যাট ৩০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
১৫. আমদানি-রফতানি শুল্ক ৩০ পার্সেন্ট কমানো হবে।
১৬. ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছানো হবে, লোডশেডিং বন্ধ করা হবে।
১৭. আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে।
১৮. টেকসই ও গ্যারান্টিসহ রাস্তাঘাট ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
১৯. রাস্তা-ঘাট ও ফেরি চলাচলে সকল ধরনের অবৈধ চাঁদা ও টোকেন মানি বাতিল করা হবে।
২০. দেশিয় এবং বৈদেশিক ঋণ ১৫ বছরের মধ্যে শূন্যের কোটায় আনা হবে।
২১. দেশজ জাতীয় উৎপাদন তথা জিডিপি ২০ পার্সেন্ট উন্নীত করা হবে।
২২. সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির বেতন ২৫ পার্সেন্ট বাড়ানো হবে।
এছাড়াও ১৬ টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে: রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন, সন্ত্রাস ও দূর্নীতি দমনের পরিবর্তে নির্মূল, ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা, মানুষের সার্বিক কল্যাণে ধর্ম ও রাজনীতির সমন্বয়, দূর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস ও খুনীদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা, মনোনয়নের ক্ষেত্রে সৎ, চরিত্রবান প্রার্থীদের বিবেচনা, কৃষি ও শিল্প বিপ্লব ঘটিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন, খুন, গুম, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা থেকে জনগণকে মুক্তি, সকল শ্রেনি পেশার মানুষের ন্যায্য অধিকার, নারীদের সমান অধিকারের পরিবর্তে অগ্রাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রযোজনী ঋণ, গ্যাস, বিদ্যুত, পানি, সুয়ারেজসহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা, ১৫ বছরে কল্যাণকামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও ক্রীড়া, স্বাস্থ্য, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিবন্ধী কল্যাণ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করার কথা ইসলামী আন্দোলনের ঘোষিত ইশতেহারে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমানসহ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক আন্দোলনসহ সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
0 মন্তব্যসমূহ