নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শীতের আগমনের শুরুতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে সাগরপথে মানবপাচারকারী চক্র। মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড পৌঁছে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্রের সদস্যরা। মূলত উকিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের টার্গেট করেই পাচারকারী চক্রের মিশন। এদিকে গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়ায় পাচারের সময় শাহপরীরদ্বীপ উপকুল থেকে ৬দালালকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, শাহপরীর দ্বীপ ডেইল পাড়ার মুত মকতুল হোছেন এর ছেলে আতাউল্লাহ আকাশ (২৮), সোলতান আহমদ প্রকাশ বর্মায়ার ছেলে ফয়সাল (২৫), কোনার পাড়ার মকতুল হোছন এর ছেলে আকতার হোসেন (২২), পশ্চিম বাজার পাড়া বর্তমানে ডেইল পাড়ার আজম উল্লাহ মাঝি (৩৮), উত্তর পাড়ার মৃত নুরু মেম্বারের ছেলে এবং কারান্তরীন ইয়াবা আরমানের ছোট ভাই মামুন (২৫), বাজার পাড়ার বাইলা প্রকশ ঘাট বাইলা। খোজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে শাহপরীরদ্বীপ ঘাট দিয়ে একদল দালাল ১৫/২০জনেরমত রোহিঙ্গাকে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশ্যে বোটে তুলে দিচ্ছে এমন খবর পেয়ে শাহপরীরদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির এসএই ইব্রাহীম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপরোল্লেখিত দালালদের আটক করে। এব্যাপারে এসআই উব্রাহীম ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, ওই ৬দালালরা মানব পাচার কাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত বলে তিনি ধারণা করছেন। এদিকে এলাকাবাসী বলেছেন, আতাউল্লাহর বড় ভাই কেফায়েত উল্লাহ ওই দালাল চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অনেকেই অভিয়োগ তুলেছেন। ওই দালালেরা মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে প্রতিজন থেকে ৫০হাজার থেকে ১লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা বলেন, কিছুদিন মানব পাচার বন্ধ থাকলেও ওই দালালেরা বর্তমানে আবারও রোহিঙ্গাদের দিয়ে মানব পাচার শুরু করেছে।
এর আগেও বেশ কযেকজন দালাল ও পাচারের স্বিকার অনেককে আটক করে কোষ্টগার্ড ও পুলিশ। ওই সিন্ডিকেট মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে টাকা নেয় তাদের কাছ থেকে। ৩ দিন ধরে সাগরের এদিক-ওদিক ঘোরানোর পর ‘থাইল্যান্ডের তীরে পৌঁছেছি’ বলে টেকনাফের সৈকতে তাদের নামিয়ে দেয় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। অনেক সময় আবার থাইলে-ের জঙ্গলেও তাদের নামিয়ে দিয়ে জীবন মরণের দিকে ঠেলে দেয়। এদিকে মানব পাচারের পুরোনো রোড় : ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে সহ¯্রাাধিক বাংলাদেশি আটক হন মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়া এই বাংলাদেশিদের অনেকেই ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় পথেই মারা যান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সেসময় ওই ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সে সময় টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ ও কচুবনিয়া ঘাট স্থানীয়দের কাছে ‘মালয়েশিয়া এয়ারপোর্ট’ নামে ব্যাপক পরিচিতি পায়। ওই ঘাট দিয়ে প্রায়ই মানবপাচার হতো তখন। এরপর মানবপাচার বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অভিযানে নামে এবং জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে। এতে করে সাগর পথে মানবপাচার শূন্যের কোটায় নেমে আসে। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে ফের টেকনাফ উপকূল শাহপরীরদ্বীপ দিয়ে সাগর পথে মানবপাচার ওই দালালরা। এ প্রসঙ্গে টেকনাফ থানার ওসি প্রদ্বীপ দাশ বলেন, ‘পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকায় মানবপাচার বন্ধ রয়েছে। আবারও যাতে মানবপাচারকারীরা সক্রিয় হতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ সর্তক অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ মাদক ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরু ট্রলারেন্সে রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ