চট্টগ্রামের দুর্যোগ প্রবণ এলাকা গুলোর বাঁশখালী উপজেলা। এই উপজেলার পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন সাগর উপকূল হওয়ায় প্রতিটি দুর্যোগে ক্ষতির সম্মুখীন হয় উপকূলীয় জনগণ। বিগত দিনে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আইলা, রোয়ানু ও সর্বশেষ মোরায় ক্ষতিগ্রস্থ গৃহহীন মানুষ গুলো নানাভাবে বাঁচার স্বপ্নের বিভোর ছিল। তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রামের স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশান (ইপসা)। তাদের সহযোগিতায় বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউনিয়নে গৃহহীন ও দুস্থ ৪২ টি পরিবারকে নতুন করে বাড়ি নির্মান এবং জনবহুল ও পানিয় জলের সমস্যা প্রবন এলাকায় ৮টি নলকূপ স্থাপন কার্যক্রম শেষ হয়েছে । ইপসা বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউনিয়নে হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও কোরিয়ার সহযোগিতায় এ কাজ বাস্তবায়ন করেছে। সে প্রকল্পের আওতায় শেখেরখীল ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও সংস্থার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়ার্ড়ে জরিপের মাধ্যমে গরীর অসহায় ও গৃহহীন মানুষ গুলো চিিহ্নত করে তাদের নতুন করে গৃহ নির্মান কাজ গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ডিসেম্বরে সে কাজ শেষ করেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও কোরিয়ার এর সহযোগিতায় ইপসা ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ী গুলো উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় জরিপ কাজের মাধ্যমে ৪২ টি বাড়ী চিিহ্নত করে। এদিকে ইপসা ও হ্যাবিট্যাট ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত বাড়ী এবং নলকূপ স্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন করার জন্য হ্যাবিট্যাট ইন্টারন্যাশনাল এর কোরিয়া ও বাংলাদেশ টিম এবং ইপসার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাঁশখালীর শেখেরখীল এলাকা পরিদর্শন করেন।
বাঁশখালী শেখেরখীল ইপসা কর্তৃক বাস্তবায়িত গৃহ নির্মাণ ও নলকূপ স্থাপনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইপসার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর কল্যাণ বড়–য়া বলেন, আমরা মানবতার জন্য নির্মাণ করি বাড়ি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিগত ৩ বছর থেকে বাঁশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে বিনামূলে গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় শেখেরখীলে ৪২টি বাড়ি ও ৮টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। যাদেরকে বাড়ি দেওয়া হয়েছে তারা অতি দরিদ্র এবং তারা কখনও বাড়ি নির্মাণের মত সামর্থ্য রাখে না। এছাড়া জনবহুল পানীয় জলের সমস্যা প্রবণ এলাকায় ৮টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে জনস্বার্থে। এর আগে ইপসা খানখানাবাদে ৪৭টি বাড়ি এবং বাহারছড়ায় ১৩৭ টি বাড়ি নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করি সম্পুর্ন বিনামুল্যে । এছাড়া ছনুয়া,গন্ডামারা ও খানখানাবাদ ইউনিয়নে ২৪০০ পরিবারকে ১০ প্রকারের গৃহ নির্মান সামগ্রী ও প্রদান করা হয় ।
এ ব্যাপারে শেখেরখীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, উন্নয়ন সংস্থা ইপসা আমার এলাকায় অসহায় গরীর গৃহহীন ৪২টি পরিবার চিিহ্নত করে তাদেরও বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। যাদের বাড়ি গুলো বসবাস করার মত কোন পরিস্থিতি ছিল না । যা আমার এলাকার গরীব জনসাধারনের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি । আমি এ প্রকল্পের দায়িত্বে কর্মকর্তা কল্যাণ বড়ুয়াকে প্রশাসনের মাধ্যমে আহবান করায় সে এ এলাকায় কাজের উদ্যোগ গ্রহন করে এবং বাস্তবায়ন করে। এছাড়া ইপসা সংস্থা ৮ টি নলকূপও স্থাপন করেন আমার ইউনিয়নের জনবহুল বিভিন্ন ওয়ার্ডে। তাদের প্রতিটি কাজ ছিল যতœসহকারে এবং ভেজালমুক্ত। আমি ধন্যবাদ জানাই সংশ্লিষ্টদের যারা আমার এলাকায় গরীব অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
বাঁশখালীর শেখেরখীলে ইপসা ও হ্যাবিট্যাট কর্তৃক বাড়ী নির্মাণ ও নলকূপ স্থাপন সংক্রান্ত ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, তাদের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিনিয়ত কাজের খবরাখবর নিয়েছি এবং ইপসা ও হ্যাবিট্যাট ইন্টারন্যাশনালের কোরিয়া ও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সাথে এ বিষয়ে আমার বিষদ আলোচনা হয়েছে। ইপসা এর আগেও বাহারছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ীসহ যে কার্যক্রম গুলো করেছে সেগুলোর ব্যাপারেও আমি অবগত আছি। তাদের কাজে কোন ধরনের ঘাটতি থাকে না।
0 মন্তব্যসমূহ