বাঁশখালীতে বোরো চারা ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এ মৌসুমকে
সামনে রেখে চাষীরা দিন-রাত জমিতে সেচ দেওয়া, জমিতে চাষ দেওয়া, বীজতলা থেকে
চারা ধান তোলা সহ বোরো ধান চাষের কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে তারা।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের প্রাপ্ত তথ্য মতে এবার বোরো চাষের লক্ষ্য
মাত্রা সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর হলে পরিবেশ ভালো থাকায় তা ১০ হাজার হেক্টর
ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান । জানা যায় প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে
চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করে বাম্পার ফলনের মধ্য দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন
পাবে। এদিকে বাঁশখালীর পুইছড়ি, নাপোড়া-শেখেরখীল, গন্ডামারা-বড়ঘোনায় আংশিক,
চাম্বল, শিলকুপ, জলদী, সরল,কাহারঘোনা-মিনজীরিতলা, বৈলছড়ি,কাথরিয়া,
কালীপুর,সাধনপুর,পুকুরিয়া,খানখানাবাদ সহ বাঁশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে
বোরোধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা। বাঁশখালীতে বোরো চাষে এক
সময় পানির উৎস ছিল বাঁশখালী ইকোপার্কের বামেরছড়া লেক । কিন্তু বিগত ২০০৮
সালের আগষ্টের দিকে বাঁশখালী ইকোপার্কের বামের ছড়া লেকের বাঁধ ভেঙ্গে যায়।
যার ফলে বোরো মৌসুমের সময় উপজেলার শীলকুপ, জলদী, চাম্বল ইউনিয়নের অনেক
আবাদি জমি অলস পড়ে থাকে। সমপ্রতি ইকোপার্কের বাঁধ পুনঃনির্মাণের ফলে বামের
ছড়া লেকে দীর্ঘ ১০ বছর পর পানির দেখা মেলে। বর্তমানে বামেরছড়া ও ডানেরছড়া
লেকে পানি থাকায় বোরো চাষের পাশাপাশি আগের মতো বারোমাসি সবজি উৎপাদনে
গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে আশাবাদী ইকোপার্কের কর্মকর্তারা। তবে এখানে
পানি বন্টনে রয়েছে নানা অনিয়মের সাথে হয়রানিও । লেকের পানি ব্যবহার করে
বিগত সময়ের চেয়ে এবার ব্যাপক পরিসরে বোরোচাষ হচ্ছে বলে জানান কৃষকেরা।
বামের ও ডানের ছড়া লেকের পানিতে শিলকুপ, জলদী, চাম্বলে হাজার হাজার একর
জমিতে চাষাবাদ হবে এমনটি ধারণা তাদের। উপজেলার জলদীর এক কৃষক জানান, তিনি
এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে সেচের দাম ৫শ টাকা,
ধান লাগানো বাবদ মজুরী ২ হাজার, ট্রাক্টরে চাষ দেওয়া বাবদ ১ হাজার ৫শ, সার,
বিষ, আছে সব মিলে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ হবে। ধানের দাম যদি বাড়ে
তাহলে লাভ হবে, অন্যতায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষকেরা। তবে বর্তমানে চারা থেকে
শুরু করে ডিজেল ও সারের সংকট না থাকায় বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানের চারা রোপণের
কাজ ইতোমধ্যেই ব্যাপক ভাবে শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল
ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনার
পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত ধান-চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়া পর্যন্ত
কৃষকদের পাশে থাকবে কৃষি বিভাগ। এবার বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা সাড়ে ৯
হাজার হেক্টর হলে পরিবেশ ভালো থাকায় তা ১০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে
জানান তিনি।
/দৈনিক আজাদী!
0 মন্তব্যসমূহ