ভারতীয় বিমান বাহিনীর সফল বোমা হামলার দাবি নাকচ করে দিয়ে পাকিস্তান বলেছে, সীমানা পেরোনোর পরপরই তাদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু এ ভারতীয় পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দেবে তারা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আদেশে পারমাণবিক বোমা সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্তদাতা সংস্থা ‘ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির’ (এনসিএ) সভা আহ্বানের তথ্য দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষা জনসংযোগ পরিদফতরের প্রধান মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। তার ভাষ্য, এবার পাকিস্তানের হামলা চালানোর পালা। ‘দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন, এনসিএ কী।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে আসা এই বক্তব্য পারমাণবিক হামলার ‘প্রচ্ছন্ন হুমকি।’
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের’ গাড়ি বহরে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বাহিনীটির অন্তত ৪০ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের ভেতরে বোমাবর্ষণ করে। ভারত জানিয়েছে, জইশ-ই-মোহাম্মদ জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটিই ছিল তাদের লক্ষ্য।
নিউজ এইটিনের ২৬ ফেব্রুয়ারির এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে হামলা চালাতে পারার দাবিকে আবারও নাকচ করে দিয়েছেন মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। তিনি বলেছেন, ভারতীয় বিমানগুলো বাধা পেয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। ভারতীয় জঙ্গি বিমানের পাকিস্তানি আকাশসীমায় ২১ মিনিট ধরে থাকার দাবিকে অস্বীকার করে তিনি আরও বলেছেন, ‘ভারতীয় বিমান আসুক ২১ মিনিট ধরে পাকিস্তানের আকাশে থাকার জন্য। তারপর আমরা দেখব কী হয়।’
আসিফ গফুর ভারতের পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এবার আমাদের পালা। বিস্মিত হওয়ার জন্য তৈরি থাকুন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এনসিএর সভা ডেকেছেন, এনসিএ কী তা বোঝার চেষ্টা করুন।’ নিউজ এইটিন একে পারমাণবিক বোমা হামলার ‘প্রচ্ছন্ন হুমকি’ আখ্যা দিয়েছে।
পাকিস্তানের এনসিএর প্রধান দেশটির প্রধানমন্ত্রী। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাটি দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত সব বিষয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধাণী কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের বিমান বাহিনী পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে এক হাজার কেজি লেজারনিয়ন্ত্রিত বোমা নিক্ষেপ করেছে। ভারতের দাবি, কাশ্মিরে নতুন আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ঠেকাতে তারা পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে এই হামলা পরিচালনা করে। ঘাঁটিটি জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক মওলানা ইউসুফ আজহারের নেতৃত্ব পরিচালিত হতো।
ভারতে এই হামলাকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দ্বিতীয় সংস্করণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালানোর দাবি করেছিল। সেসময়ও পাকিস্তান ভারতীয় দাবিকে অসত্য আখ্যা দিয়েছিল।
/বাংলা ট্রিবিউন!
0 মন্তব্যসমূহ