আবদুর জব্বারঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাম্বল ইউপি’র দারুল উলুম আইনুল ইসলাম মাদ্রাসার সামনে প্রধান সড়কে ভ্যানগাড়ি হতে ভাঙারি বস্তাভর্তি ৩টি দেশীয় অস্ত্রসহ ২ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। রবিবার রাত ৯ টার দিকে থানা পুলিশের ওসি মোঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই মাদ্রাসার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে তল্লাশী অভিযান চালায়।
অভিযানে সরল ইউপি’র ৭নং ওয়ার্ডের হারুন বাজার কানুনগোখীল এলাকার কবির আহমদের পুত্র ভ্যানচালক মোঃ রুবেল (২৬) ও মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র নন্না মিয়া (৪৫) আটক করা হয়। এই সময় তাদের কাছ থেকে ২টি দেশীয় এক নলা ও ১টি এলজি উদ্ধার করা হয়। আটকৃত ২ জনের বিরুদ্ধে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করেছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। এদিকে দীর্ঘদিন থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রামের বিকল্প আঞ্চলিক মহাসড়ক বাঁশখালী পিএবি সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ পাচার হচ্ছে অস্ত্র ও মাদক। পুলিশ পাচারকারীদের ধরতে যতই অভিযান পরিচালনা করুক না কেন থামছে না পাচারকারীদের দৌরাত্ম।
তাছাড়া মহেশখালী হতে উৎপাদিত দেশীয় অস্ত্র বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল, পুঁইছড়ি, শেখেরখীল, গন্ডামারা, সরলসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে দাগী চিহ্নিত অপরাধী ও ডাকাত দলের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে অনায়াসে। এই অস্ত্রের অপ-ব্যবহার হচ্ছে রাতের আঁধারে ডাকাতি ও বিভিন্ন কর্মযজ্ঞে। অপরদিকে বিভিন্ন এলাকা হতে চিিহ্নত দাগী অপরাধী ও ডাকাতরা সংঘটিত হয়ে শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে চাম্বলের খলিফা পাড়া ও হায়দারী মুড়া পাহাড়ি এলাকার পাদদেশে। এই সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের মদদে রয়েছে প্রভাবশালী মহল। ডাকাত দলের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই প্রাণ নাশের শংকায় শংকিত বসবাসকারী সাধারণ মানুষরা। তাছাড়া প্রতিদিন ডাকাতদলের অস্ত্রের ঝনঝনানিতে শংকিত হয়ে উঠেছে ওই এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষসহ বন কর্মকর্তারাও।
চাম্বলের পাহাড়ের পাদদেশে একাধিক হত্যা, অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার পলাতক আসামী মোঃ ইরান (২৭), ফরহাদুল ইসলাম (২৪), জাগের হোছাইন (২৬), মোঃ নেছার (৪৪), বাবুল (৩৮) এর নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হতে দাগী সন্ত্রাসী ও ডাকাতরা শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। প্রতিদিন ওই এলাকার মৃত আবদুচ ছালামের পুত্র বাবুলের চায়ের দোকানে বসে স্বশস্ত্র ডাকাতদল আড্ডায় মত্ত থাকে। তাছাড়া প্রকাশ্য মাদক বিক্রি ও সেবনের আখড়া গড়ে তুলেছে চাম্বলের খলিফা পাড়া পাহাড়ের পাদদেশের এলাকা। মাদক সেবন করতে উঠতি বয়সী তরুণরা যোগ দিচ্ছে ওই সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের ঘাঁটিতে। সব মিলিয়ে বাঁশখালীর চাম্বল অপরাধী ও অস্ত্রধারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে চাম্বল বিট কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি অদৃশ্য কারণে মুখ খুলতে রাজি হননি।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল হোসেন অস্ত্রসহ যুবক আটকের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রতিনিয়ত পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় অস্ত্র ও অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে ডাকাতের ঘাঁটি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান।
0 মন্তব্যসমূহ