দেশের অন্যতম একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন অঞ্চল চট্টগ্রামের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত উপজেলা বাঁশখালী। যার উত্তরে শঙ্খনদী, দক্ষিণে চকরিয়া-পেকুয়া, পূর্বে পাহাড় এবং পশ্চিম সীমান্ত বঙ্গোপসাগর সীমারেখায় অবস্থিত।
পাহাড়, নদী, আর সাগরের সংমিশ্রণে আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচড়া সমুদ্র সৈকত। শুধু পাহাড়-নদীই নয়, এখানে এলে দূর থেকে মনে হবে বিশাল বিশাল সমুদ্রের ঢেউ। লেকের পানির মতো স্বচ্ছ জলরাশি।
এই উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত দিন দিন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তাই প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে অসংখ্য লোকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে বাহারছড়ার রত্নপুর ও কদমরসুল উপকূলীয় এলাকা। সম্প্রতি শীতের মৌসুমে পর্যটকের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
বাঁশখালী ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, খানখানাবাদের উপকূলজুড়ে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে সুদীর্ঘ ৩৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই সমুদ্র সৈকত। সৈকতে সারি সারি ঝাউ গাছ। ঘন ঝাউ বাগান। জোয়ার-ভাটার ঢেউয়ের শব্দ পর্যটকের মন কাড়ে। তাই বর্তমানে আনন্দভ্রমণ কিংবা পিকনিক স্পটের বিকল্প হিসেবেও পর্যটকরা বেছে নিয়েছে এ অঘোষিত প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পটকে।
সমুদ্র লাগোয়া অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে এই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট মহলের। এ জন্য বনবিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে লাল কাঁকড়া। যদি খুব সকালে সৈকত যাওয়া যায় তবেই দেখতে পাওয়া যাবে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া। সমুদ্রের ভেজা বালির উপর লাল কাঁকড়া দেখলে লাল কার্পেটের মত লাগে। এই লাল কাঁকড়া সৈকতের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
এখান থেকে সরাসরি সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। সমুদ্রের সঙ্গে গা ঘেঁষে রয়েছে কুতুবদিয়া চ্যানেল আর নিকটেই দ্বীপ কুতুবদিয়া। জাতীয় দিবস ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত হাজারো লোকের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
কক্সবাজার, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের চেয়েও এখানকার সৈকত অনেক বেশি প্রশস্ত। তবে বর্ষাকালে এই প্রশস্ততা কিছুটা কমে আসে। ১৯৯১ সাল থেকে বেশ কয়েকটি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় এই এলাকার বেঁড়িবাধ তছনছ করে দিয়ে গেছে। ফলে পর্যটনের সৌন্দর্য সেখানে বিকশিত হচ্ছে না। তবে বর্তমান সরকার ইতিপূর্বে বেঁড়িবাধ নির্মাণের ফলে এই সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক উপকূলটি দৃশ্যমান হয়েছে।
বাঁশখালী উপকূলীয় বনবিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা অলিউর রহমান জানান, এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় উপকূলকে পর্যটন স্পটে রূপান্তরের জন্য পুরো উপকূলজুড়ে ঝাউবাগান ও প্যারাবাগান সৃষ্টির জন্য বর্তমান সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যাতে যে কেউ এখানে এসে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ