কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার প্রতিবাদে বিভিন্ন সড়কে কলাগাছ রোপণ করা হয়েছে। পরে এসব কলাগাছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফজলুল সাঈদীর ছবি টাঙিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার খবরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকেরা বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
রোববার দুপুরে চকরিয়া পৌরসভার কাজীরপাড়া, বাজার পাড়া, তরছঘাটা, ফুলতলা, জালিয়াপাড়া, জনতা মার্কেট, থানা সেন্টার, বাটাখালী, চিরিংগা ইউনিয়নের অন্তত পাঁচটি গ্রামে, খুটাখালী ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের অন্তত ১২-১৩টি গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে ও সড়কের পাশে সদ্য রোপণ করা কলাগাছ দেখা যায়। আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল সাঈদীর সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা এসব কলাগাছ রোপণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। অনেকে চকরিয়া পৌর শহরে ও চিরিংগা ইউনিয়নে কলাগাছ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। তাঁদের দাবি, দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করে তৃণমূলের নেতা ফজলুল সাঈদীকে মনোনয়ন দিতে হবে।
বিকেল পাঁচটার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলী স্টেশন এলাকায় কলাগাছ রোপণ করেন চকরিয়া পৌর যুবলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জামাল উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফজলুল সাঈদী তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রাণ। তাঁর নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ। গত উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে সাঈদীকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আশ্বাসের পর আশ্বাস দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এবারও মনোনয়ন দেননি। আমরা এবার তাঁকেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাব।’
এই ঘটনায় ফজলুল সাঈদী নিজের ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ‘জনতা আমার শক্তি, কলাগাছ আমার মার্কা। এরপর থেকে কলাগাছ আন্দোলন গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফজলুল করিম সাঈদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কলাগাছ রোপণ করছেন। আমিও দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছে আবেদন জানাব, আপনারা আরও বিবেচনা করুন, কার জনপ্রিয়তা কতটুকু তা দেখুন। প্রয়োজনে কেন্দ্র থেকে টিম পাঠান চকরিয়ায়। প্লিজ, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতকে শ্রদ্ধা করুন।’
এদিকে চকরিয়া পৌরসভার কয়েকটি জায়গায় রোপণ করা কলাগাছ উপড়ে ফেলতে গিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা স্টেশনে দুপক্ষের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠজন ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক যাচাইবাছাই করে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে দলের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আবেগ-উচ্ছ্বাস থাকতে পারে। তবে সময়মতো সবাই দলের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামবে।’
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ফজলুল সাঈদীর পক্ষে কলাগাছ রোপণের খবর পেয়েছি। বিষয়টি দলীয় হাইকমান্ডকে জানানো হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী যাঁকে দলের প্রার্থী করেছেন, তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করা উচিত।’
/প্রথম আলো!
0 মন্তব্যসমূহ