স্বামীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় রিমান্ডে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চিকিৎসক তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিতুকে আবারও রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে বলে
জানিয়েছে পুলিশ। মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে তাকে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পুলিশ তাকে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
জানিয়েছে পুলিশ। মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে তাকে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পুলিশ তাকে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দুইদিন মিতু মাহবুব ও প্যাটেলসহ অন্যান্যদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করে আসলেও জিজ্ঞাসাবাদের শেষদিনে তিনি উল্লেখিতদের সাথে এ ধরনের সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করে নেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, রিমান্ডের তৃতীয়দিনে উল্লেখিতদের সাথে বিশেষ সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করলেও ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেছেন। এ কারণে ১৬১ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। এতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় হাইকোর্টের আদেশ অনুসরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে মিতু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে তদন্তের স্বার্থে মিতুকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এবিষয়ে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, আবারও আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করব। প্রথম দফা জিজ্ঞাসাবাদে আসামি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে আরও কিছু তথ্য আদায় বাকি রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামি রাজি থাকলে আদালতে জবানবন্দি দেবেন।
প্রসঙ্গত: স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে গত ৩১ জানুয়ারি ভোরে নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় নিজ বাসায় শিরায় বিষপ্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ। এর আগে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। একইদিন রাতে নগরীর নন্দনকানন এলাকা থেকে মিতুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩২ বছর বয়সী আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবেদনবিদ (অ্যানেসথেশিস্ট) বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে।
নগরীর চান্দগাঁও থানার চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়িতে তাদের পরিবারের বসবাস। তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর বাড়ি কঙবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ এলাকায়। চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডে মিতুর বাবার বাসা।
এঘটনায় ১ ফেব্রুয়ারি আকাশের মা জোবেদা খানম বাদি হয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরীসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায় দায়ের হওয়া মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মিতু’র বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, মা শামীমা শেলী ও বোন সানজিলা হক চৌধুরী, মিতু’র কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম এবং আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনায় বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক প্যাটেল। এসআই মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, এ মামলায় দেশে থাকা আসামিদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
/চাটগাঁর সংবাদ!
0 মন্তব্যসমূহ