আব্দুল আলীম নোবেলঃ
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ও জেলা ট্রেজারসহ চার কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে দায়েরকৃত ৮ মামলার তদন্ত করছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই জন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টীম। সোমবার সকালে তারা জেলা সদর হাসপালে যান এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেন। প্রায় ১৯ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৮ সালে পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডা: সোলতান আহম্মদ সিরাজী বলেন, দুদককে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়েছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনষ্টিটিউট নিয়ে পৃথক বিল ভাউচার বানিয়ে, বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ইফতেখার উদ্দিন (প্রধান সহকারী, চকরিয়া), আবদু সবুর (ট্রেজারার সুপার), আবদু সামাদ ( প্রধান সহকারী ) ও জেলা ট্রেজারার নাছির উদ্দিন মো. আবু সুফিয়ান তৎসময়ে চাকুরী কালীন জেলা সদর হাসপাতালে বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
এঘটনা দুদক তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১২ সাল থেকে দীর্ঘদিন তদন্তের পর সহকারী পরিচালক ( এডি) হুমায়ুন আহম্মদ বাদী হয়ে (দুদক চট্টগ্রাাম) বাদী হয়ে গত ২০১৮ সালে পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী তিন কর্মকর্তারা হলেন, ইফতেখার উদ্দিন ( প্রধান সহকারী), আবদু সামাদ ( তৎকালীন ট্রেজারী সুপার) ও জেলা ট্রেজারার নাছির উদ্দিন মো. আবু সুফিয়ান।
এঘটনার পর আবদু সামাদ ২০১২ সালে মারা যান। ওই সময় তার অফিস বিভিন্ন ড্রয়ারের তালা ভেঙ্গে সেখান থেকে প্রায় নগদ কোটি টাকা এবং ১৭ ভরি স্বর্নালংকার উদ্ধার করেন ডা.রফিক, অফিস সহকারী রেজাউল করিম সহ কয়েক জনের একটি টীম। এগুলো দুদকে জমা দেয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করতে দুদকের একটি টীম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ কার্যক্রম চলে। দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. রিয়াদ ও মো. শরীফ উদ্দিন তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
সুত্র জানায়, আবদু সামাদ (তৎকালীন প্রধান সহকারী) ২০১২ সালের মৃত্যুর আগে তিনি চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার গোলাম রসুল পুর মাকের্টে কোটি টাকার শপিং মল, জেলা সদর হাসপাতালের পাশে (জেলা সদর হাসপাতালের প্রস্তাবিত নাসিং ইনস্টিটিউিট এর জায়গা) দ্বিতল ভবনসহ স্বনামে বেনামে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হন প্রয়াত এই আবদু সামাদ। তৎসময়ে ওই প্রধান সহকারী আবদু সামাদ ছাড়াও হাসপাতালের অনেক কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্নীতির বিষয় তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা চার্জসীট সহসাই দাখিল করা হবে।
জেলা সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা: সোলতান আম্মদ সিরাজী বলেন, দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তারা কিছু ডকুমেন্টস সরবরাহ চান, তা তদন্ত কর্মকর্তাকে সরবরাহ দেয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ