কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর গানের ক্ষেত্রে ভক্ত-শ্রোতাদের যা বলেছেন, তা-ই উপহার দিয়েছেন। তবে কাছের মানুষদের কাছে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা শুধুই তার কল্পনা। বলেছেন মজার ছলে। অতীত খুঁড়ে এমনই কিছু কথা ভক্তদের জন্য তুলে ধরলেন আসিফ।
শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে স্কুল-কলেজ জীবনের কিছু স্মৃতি উল্লেখ করেছেন আসিফ। তিনি লেখেন, ‘শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই পড়াশোনার প্রতি একটা বিতৃষ্ণা ছিল। জীবনে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই সেদিন হাতে ছিল শুধু মলাট, ভেতরের কাগজগুলো আগেই এ্যারোপ্লেন হয়ে আকাশে উড়ে গিয়েছে।’
বন্ধু বেলাল আর আমি একসঙ্গেই আওয়ার লেডী অব ফাতিমা গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হই। আজ ওর নামের পাশে ড. আর আমি ট্রাক্টর। জিলা স্কুলেও শিক্ষা জীবন কাটিয়ে দিয়েছি এক খাতার উপরে। দুই হাত খালি, ব্যাক পকেটে খাতা। প্রহারের পর প্রহারেও লক্ষ্যচ্যুত হইনি। স্যার কিংবা আপা তাদের প্রতিদিনের হাতের ব্যায়ামটা আমার ওপর সেরে ফেলতেন। কলেজেও একই অবস্থা। শ্রদ্ধেয় প্রফেসর আমীর আলী স্যার একদিকে শুরু করতেন মাইকেলের ‘সমুদ্রের প্রতি রাবন’- আরেক দিকে আমার বন্ধুরাসহ আমি পগারপার টু স্টেডিয়াম। ভিক্টোরিয়া কলেজের ক্রিকেট ক্যাপ্টেন হিসেবে ব্যাপক ছাড় পেয়ে ইন্টার পাশ।’
বিয়ে এবং নকল করার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে আসিফ লেখেন, ‘সমস্যা বাঁধলো অনার্সে ভর্তি হয়ে। প্রথমে ইকোনোমিক্স নেয়ার চিন্তা ছিল। অনেক সার্ভে করার পর লিপষ্টিক সাইন্স মানে, রাজনীতি বিজ্ঞানে ভর্তি হলাম। করে ফেললাম বিয়ে। বেকার বিবাহিতরাই শুধু আমার তৎকালীন সিকোয়েন্সটা বুঝতে পারবেন। যাই হোক, বন্ধু বাবুলের সহযোগিতায় ইকোনো বলপেন এর গায়ে কাটা কম্পাস দিয়ে পয়েন্টগুলো লিখে নিয়ে যেতাম পরীক্ষা হলে।’
আসিফ আরো লেখেন, ‘শীতের কোমল রোদে দুই বন্ধু ছাদে গিয়ে পড়তাম। আম্মা খুব খুশি। তিনি ভেবেই নিয়েছিলেন, এবার উনার মেধাবী ছেলেটা পড়াশোনায় মনযোগ দিয়েছে। এটাও বিয়ের পজিটিভ সাইড এফেক্ট হিসেবেই নিয়েছিলেন তিনি। আসলে ইজ্জত বাঁচাতে ছাদে বসে নকল করতাম। হলে পরীক্ষার সময় এতগুলো কলম দেখে স্যার ভাবতেন, উড়াই ফেলবো পরীক্ষা দিয়ে।’
তিনি লেখেন, ‘পরীক্ষা দিয়ে এসে বউয়ের সাথে ডিসকাস করতাম এবং বলে দিতাম সাতচল্লিশ পাবো। ফার্স্ট সেকেন্ড এবং থার্ড ইয়ারে ছয় পেপারে পেয়েছি সাতচল্লিশ করেই। বাকি দুই পেপারের মার্ক ছিল বায়ান্ন এবং বিয়াল্লিশ, অ্যাভারেজ টোটাল করলে দাঁড়ায় সাতচল্লিশ। বিবাহিত ছাত্রের অবিবাহিত শিক্ষক শ্রদ্ধেয় মইনুল স্যার বললেন, আমার জীবনে এরকম ধারাবাহিকতা কখনো দেখিনি। স্যার ছিলেন ব্যাচেলর, তিনি কিভাবে বুঝবেন বিয়ের সাইড এফেক্ট।’
৪৭ বছর বাঁচার প্রসঙ্গে স্ত্রীকে বলা কথাগুলো মনে করে আসিফ লেখেন, ‘সমস্যা অন্য জায়গায়, খুশীতে ঠেলায় তখন বউকে বলেছিলাম, দেইখো আমি সাতচল্লিশ বছরই বাঁচবো কিংবা বাঁচতে চাই। আর পয়তাল্লিশ দিন পর আমার বয়স হবে সাতচল্লিশ। এই বছর আবার লিপইয়ারও নাই, যে একদিন বেশি বাঁচবো! কমিটমেন্ট ভাঙার লোক আমি না, বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। বেঁচে থাকলে বিয়ে করবো ইনশাল্লাহ, আর যদি মরে যাই তাহলে পুরোনো কথা রিপিট করে গেলাম।’
সবশেষে আসিফ লেখেন, ‘লেখাপড়া করে জীবনে কেউ কিছু করতে পারে নাই। তবে জ্ঞ্যান অর্জন করে তা বাটোয়ারা করে যেতে হবে, জ্ঞ্যান কবরে নিয়ে যাওয়ার জিনিস নয়।’এদিকে ৪৭ বছর বেঁচে থাকার বিষয়টি তার ভক্তদের ভাবিয়ে তুলেছে। তার এই স্টাটাসের প্রতিক্রিয়ায় এস আই সুমন নামের একজন ভক্ত মন্তব্য করেন- ‘ভাইয়া লেখাগুলা প্রথমে ভালোই লাগছিল। কিন্তু পুরোটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমিও ছোটবেলা থেকে আপনাকে অনুসরন করতাম। আপনার দেখাদেখি পড়াশুনা করা অবস্থাতেই বিয়ে করি। ভালবছিলাম মিতু নামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করবো। কিন্তু হলো না। সে উড়াল দিলো। বিয়ে করে আল্লাহর রহমতে দুটো ছেলেও হয়েছে। কিন্তু এই ৪৭ বছরটাই বেকায়দায় ফেলে দিলো। যাক, যদি এমন কিছু হয় তবে ৪৭ বয়সটাকে আমিও মেনে নিবো। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আপনি অনেক বছর বেঁচে থাকুন। ভাল থাকুন ভাইয়া। আপনার সুস্থতাই আমার একমাত্র কাম্য।’
অন্য এক ভক্ত লেখেন, ‘মনটা খারাপ করে দিলেন। ছবিটা দেখে প্রথমে মনটা ভালো হলো, লেখাটা পড়ে তার চেয়ে বেশি কষ্ট লাগলো। আমাদের নিঃশ্বাস আপনি। আর আপনি যদি থেমে যান, তাহলে অকালে থেমে যেতে হবে, আমাকেও। আল্লাহ আপনাকে আরও নেক হায়াত দান করুন এবং আপনি বিয়ে করার পর আমি বিয়ে করবো। মনে রাইখেন, ভালবাসা অবিরাম বস্।’ইমন আহমেদ নামে এক ভক্ত লেখেন, ‘ভাইজান, আল্লাহতায়ালা আপনাকে আমাদের মাঝে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখুক। সেই দোয়া করি। আপনার এই ধরনের কথা শুনলে আর আমাদের দেহে প্রাণ থাকে না। ভালোবাসা ভাই, দোয়া সবসময়।’
কথাগুলোর বিষয়ে সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘জন্ম, মৃত্যু ও বিয়ে আল্লাহর হাতে। আমি শুধু আমার পুরোনো স্মৃতিগুলো স্মরণ করেছি। এর বেশি কিছু না।’
ডেইলি বাংলাদেশ/এনএ/জেডআ
শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে স্কুল-কলেজ জীবনের কিছু স্মৃতি উল্লেখ করেছেন আসিফ। তিনি লেখেন, ‘শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই পড়াশোনার প্রতি একটা বিতৃষ্ণা ছিল। জীবনে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই সেদিন হাতে ছিল শুধু মলাট, ভেতরের কাগজগুলো আগেই এ্যারোপ্লেন হয়ে আকাশে উড়ে গিয়েছে।’
বন্ধু বেলাল আর আমি একসঙ্গেই আওয়ার লেডী অব ফাতিমা গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হই। আজ ওর নামের পাশে ড. আর আমি ট্রাক্টর। জিলা স্কুলেও শিক্ষা জীবন কাটিয়ে দিয়েছি এক খাতার উপরে। দুই হাত খালি, ব্যাক পকেটে খাতা। প্রহারের পর প্রহারেও লক্ষ্যচ্যুত হইনি। স্যার কিংবা আপা তাদের প্রতিদিনের হাতের ব্যায়ামটা আমার ওপর সেরে ফেলতেন। কলেজেও একই অবস্থা। শ্রদ্ধেয় প্রফেসর আমীর আলী স্যার একদিকে শুরু করতেন মাইকেলের ‘সমুদ্রের প্রতি রাবন’- আরেক দিকে আমার বন্ধুরাসহ আমি পগারপার টু স্টেডিয়াম। ভিক্টোরিয়া কলেজের ক্রিকেট ক্যাপ্টেন হিসেবে ব্যাপক ছাড় পেয়ে ইন্টার পাশ।’
বিয়ে এবং নকল করার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে আসিফ লেখেন, ‘সমস্যা বাঁধলো অনার্সে ভর্তি হয়ে। প্রথমে ইকোনোমিক্স নেয়ার চিন্তা ছিল। অনেক সার্ভে করার পর লিপষ্টিক সাইন্স মানে, রাজনীতি বিজ্ঞানে ভর্তি হলাম। করে ফেললাম বিয়ে। বেকার বিবাহিতরাই শুধু আমার তৎকালীন সিকোয়েন্সটা বুঝতে পারবেন। যাই হোক, বন্ধু বাবুলের সহযোগিতায় ইকোনো বলপেন এর গায়ে কাটা কম্পাস দিয়ে পয়েন্টগুলো লিখে নিয়ে যেতাম পরীক্ষা হলে।’
আসিফ আরো লেখেন, ‘শীতের কোমল রোদে দুই বন্ধু ছাদে গিয়ে পড়তাম। আম্মা খুব খুশি। তিনি ভেবেই নিয়েছিলেন, এবার উনার মেধাবী ছেলেটা পড়াশোনায় মনযোগ দিয়েছে। এটাও বিয়ের পজিটিভ সাইড এফেক্ট হিসেবেই নিয়েছিলেন তিনি। আসলে ইজ্জত বাঁচাতে ছাদে বসে নকল করতাম। হলে পরীক্ষার সময় এতগুলো কলম দেখে স্যার ভাবতেন, উড়াই ফেলবো পরীক্ষা দিয়ে।’
তিনি লেখেন, ‘পরীক্ষা দিয়ে এসে বউয়ের সাথে ডিসকাস করতাম এবং বলে দিতাম সাতচল্লিশ পাবো। ফার্স্ট সেকেন্ড এবং থার্ড ইয়ারে ছয় পেপারে পেয়েছি সাতচল্লিশ করেই। বাকি দুই পেপারের মার্ক ছিল বায়ান্ন এবং বিয়াল্লিশ, অ্যাভারেজ টোটাল করলে দাঁড়ায় সাতচল্লিশ। বিবাহিত ছাত্রের অবিবাহিত শিক্ষক শ্রদ্ধেয় মইনুল স্যার বললেন, আমার জীবনে এরকম ধারাবাহিকতা কখনো দেখিনি। স্যার ছিলেন ব্যাচেলর, তিনি কিভাবে বুঝবেন বিয়ের সাইড এফেক্ট।’
৪৭ বছর বাঁচার প্রসঙ্গে স্ত্রীকে বলা কথাগুলো মনে করে আসিফ লেখেন, ‘সমস্যা অন্য জায়গায়, খুশীতে ঠেলায় তখন বউকে বলেছিলাম, দেইখো আমি সাতচল্লিশ বছরই বাঁচবো কিংবা বাঁচতে চাই। আর পয়তাল্লিশ দিন পর আমার বয়স হবে সাতচল্লিশ। এই বছর আবার লিপইয়ারও নাই, যে একদিন বেশি বাঁচবো! কমিটমেন্ট ভাঙার লোক আমি না, বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। বেঁচে থাকলে বিয়ে করবো ইনশাল্লাহ, আর যদি মরে যাই তাহলে পুরোনো কথা রিপিট করে গেলাম।’
সবশেষে আসিফ লেখেন, ‘লেখাপড়া করে জীবনে কেউ কিছু করতে পারে নাই। তবে জ্ঞ্যান অর্জন করে তা বাটোয়ারা করে যেতে হবে, জ্ঞ্যান কবরে নিয়ে যাওয়ার জিনিস নয়।’এদিকে ৪৭ বছর বেঁচে থাকার বিষয়টি তার ভক্তদের ভাবিয়ে তুলেছে। তার এই স্টাটাসের প্রতিক্রিয়ায় এস আই সুমন নামের একজন ভক্ত মন্তব্য করেন- ‘ভাইয়া লেখাগুলা প্রথমে ভালোই লাগছিল। কিন্তু পুরোটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমিও ছোটবেলা থেকে আপনাকে অনুসরন করতাম। আপনার দেখাদেখি পড়াশুনা করা অবস্থাতেই বিয়ে করি। ভালবছিলাম মিতু নামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করবো। কিন্তু হলো না। সে উড়াল দিলো। বিয়ে করে আল্লাহর রহমতে দুটো ছেলেও হয়েছে। কিন্তু এই ৪৭ বছরটাই বেকায়দায় ফেলে দিলো। যাক, যদি এমন কিছু হয় তবে ৪৭ বয়সটাকে আমিও মেনে নিবো। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আপনি অনেক বছর বেঁচে থাকুন। ভাল থাকুন ভাইয়া। আপনার সুস্থতাই আমার একমাত্র কাম্য।’
অন্য এক ভক্ত লেখেন, ‘মনটা খারাপ করে দিলেন। ছবিটা দেখে প্রথমে মনটা ভালো হলো, লেখাটা পড়ে তার চেয়ে বেশি কষ্ট লাগলো। আমাদের নিঃশ্বাস আপনি। আর আপনি যদি থেমে যান, তাহলে অকালে থেমে যেতে হবে, আমাকেও। আল্লাহ আপনাকে আরও নেক হায়াত দান করুন এবং আপনি বিয়ে করার পর আমি বিয়ে করবো। মনে রাইখেন, ভালবাসা অবিরাম বস্।’ইমন আহমেদ নামে এক ভক্ত লেখেন, ‘ভাইজান, আল্লাহতায়ালা আপনাকে আমাদের মাঝে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখুক। সেই দোয়া করি। আপনার এই ধরনের কথা শুনলে আর আমাদের দেহে প্রাণ থাকে না। ভালোবাসা ভাই, দোয়া সবসময়।’
কথাগুলোর বিষয়ে সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘জন্ম, মৃত্যু ও বিয়ে আল্লাহর হাতে। আমি শুধু আমার পুরোনো স্মৃতিগুলো স্মরণ করেছি। এর বেশি কিছু না।’
ডেইলি বাংলাদেশ/এনএ/জেডআ
0 মন্তব্যসমূহ