গাজী গোফরানঃ
ত্যাগের পরিনাম স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর ৭৬ বছর বয়সি একজন মুক্তিযোদ্ধা যখন রিক্সা চালক!
ব্যক্তিটির নাম মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আলম বয়স ৭৬ বছর, নিজ বাড়ি লক্ষীপুর হলেও ১৯৭২ সাল থেকে চট্টগ্রাম থাকেন৷
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর হারিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের পিরোজ শাহ্ কলনির ছোট্ট একটি ঘরে দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে বসাবাস করছেন৷
পেশায় রিক্সা চালক৷
মুক্তিযোদ্ধা স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও বাংলাদেশে কোন মুক্তিযোদ্ধা রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে এটা অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে সত্য৷
মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আলম বলেন ১৯৭১ সালে ভারতে ট্রেনিং শেষ করে ১১নং সেক্টর এর আলফা গ্রুপে মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্ব দেন৷ ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ হারিয়ে ফেলেছেন এরপর তিনি মু্ক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে সনদের জন্য গেলে ওখানে ৫০/৬০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করলে তিনি ফিরে আসেন৷ মুক্তিযোদ্ধা করেছি দেশের জন্য কিন্তু খুব কষ্ট হয়েছে একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিতে ঘুষ দাবী করে,কেন ঘুস দেব, পরিশ্রম করে যোদ্ধ করেছি ঘুষ দিয়ে সনদ নিতে নয়।
ঘুষ চাওয়ার পর আর সনদের জন্য কোন চেষ্টা করিনি, আমি অসুস্থ আমার চোখে কম দেখি,শরীরে জোর নেই তবুও পেটের দায়ে রিক্সা নিয়ে বাহির হতে হয়৷
স্থানীয় একজন সমাজ সেবক ও নারী উদ্দ্যেক্তা মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আলমের চোখের চিকিৎসা করার দায়িত্ব নিয়েছেন৷
মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আলম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে বলছি আমার জীবনের শেষ বয়সে হলেও আমাকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার আওতায় আনা হউক৷ মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আলমের দুচোখ ভেয়ে অসহায়ত্বের পানি ঝড়ছিল৷
একজন মুক্তিযোদ্ধা যিনি জীবনের মায়া না করে যুদ্ধে গিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন অথচ অট্টালিকা আর কালো টাকার সম্পদশালীদের ভীড়ে ৭৬ বছর বয়সে রিক্সা চালিয়ে জীবন যুদ্ধ করতে হচ্ছে হয়তো এই মুক্তিযোদ্ধা আজকের ১৬ কোটি বাঙ্গালীর মুখে হাসি ফুটাতে ৪৭ বছর আগে জীবনের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছিল দেশ স্বাধীন করতে রাইফেলের বুলেটে শক্রকে প্রতিহত করে৷
বিবেক কোথায়? আজ একজন মুক্তিযোদ্ধা রিক্সা চালিয়ে জীবন যাপন করছে কেন?
যে দেশে মুক্তিযোদ্ধার কদর নেই সেই দেশ আসলে কি পারবে উন্নয়নশীল দেশ হতে?
তখন কি বহির্বিশ্ব বলবেনা তোমার দেশে মুক্তিযোদ্ধা ৭৬ বছর বয়সে রিক্সা চালায়৷
ছবিঃ যমুনা নিউজ
0 মন্তব্যসমূহ