বি,এন ডেস্কঃ
নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলার সময়েই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর ওপর গাড়ি তুলে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। আহত দুই ছাত্রীর একজনকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলার সময়েই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর ওপর গাড়ি তুলে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। আহত দুই ছাত্রীর একজনকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী
ও আহত শিক্ষার্থীদের সহপাঠীরা জানান, পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কর্মসূচি শেষ করে
ক্যাম্পাসে চলে আসেন। পরে ক্যাম্পাস থেকে টিএসসিতে যাওয়ার সময় প্রধান ফটকের
সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনের গাড়ি (ঢাকা
মেট্রো গ-১৭৯৫৬৩) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্স প্রথম
সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ইমা আক্তার ও স্নাতক প্রথম বর্ষের আয়শা মোমেনাকে
ধাক্কা দেয়। ওই শিক্ষকই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়ির ধাক্কায় ইমা আক্তার দূরে
ছিটকে পড়েন। কিন্তু আয়েশা মোমেনা গাড়ির ধাক্কায় গাড়ির সামনে পড়লে তাঁর
পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে যায়। তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলে
উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা গাড়িটি আটক করে আহত আয়শাকে হাসপাতালে নেওয়ার
অনুরোধ করেন। এ নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে আয়েশাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের
অ্যাম্বুলেন্স করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার
জন্য অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থী ইমা আক্তার বলেন,‘আমরা দুজন ক্যাম্পাস থেকে
বের হওয়ার সময় একটি প্রাইভেট কার আমাদের ধাক্কা দেয়। আমি দূরে ছিটকে পড়ি।
আর আয়েশার ওপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দেয়। পরে আহত আয়েশাকে ওই শিক্ষকের গাড়িতে
করে হাসপাতালে নিতে চাইলে তিনি রাজি হননি।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আহত
শিক্ষার্থী আয়েশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে
নেওয়া হয়েছে। আয়েশার চিকিৎসা ভার শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন নিজে দায়িত্ব
নিয়েছেন।’
এ বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন দুঃখ প্রকাশ
করে বলেন, ‘ব্রেক কাজ না করার জন্য দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমি আহত শিক্ষার্থীর
সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আর আমি তাকে গাড়িতে নিতে চেয়েছিলাম
কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী ভুল–বোঝাবুঝির কারণে আমার গাড়িতে হামলা চালায়।’
এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
পরে সকাল ১০টার দিকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা
প্রগতি সরণির ঘটনায় জড়িত বাসচালকের শাস্তি, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
সামনে স্পিড ব্রেকার নির্মাণসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের ডাবল ট্রিপ
চালু, প্রধান ফটকের সামনে ফুটওভারব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার নির্মাণের দাবি
জানান। বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের
দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শেষ করেন।
/প্রথম আলো/
0 মন্তব্যসমূহ