কারাবন্দি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে নামার আগে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও জামায়াতকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির নেতাদের মধ্যে। কেউ কেউ বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি যেন শুধু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে জামায়াতও দলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক স্কাইপির মাধ্যম বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক সূত্রে এসব জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, ‘আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, তার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসা, সদ্য সমাপ্ত ডাকসু নির্বাচনে ভরাডুবি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও এ সময় স্থায়ী কমিটির দুজন নেতা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুই নেতার বক্তব্য ছিল এমন যে, “বিএনপির রাজনীতি এখন ঐক্যফ্রন্টমুখী হয়ে গেছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেদের রাজনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে।” যদিও তাদের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তারেক রহমান কিছু বলেননি।’
সূত্রে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করা সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় তোলেন একজন সদস্য। এই প্রসঙ্গ উঠলে অন্যরাও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার সমালোচনা করেন। তারপর সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন কতটুকু সঠিক ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দু-একজন সদস্য।
স্থায়ী কমিটির দুজন নেতা বলেন, ‘বৈঠকে জামায়াতকে জোটে রাখা নিয়ে আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে কেউ কেউ বলেন, “খালেদা জিয়া জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছেন। তাই তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।” আবার কেউ কেউ মত দেন, “জামায়াত বিএনপির জন্য একটি বোঝা। তারা নিজ থেকে জোট ছাড়তে না চাইলে, তাদের সরিয়ে দেওয়া উচিত।” এছাড়া সবাই বলেছেন, “খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলনেও নামতে হবে।” তবে এর আগে দলের বিভিন্ন জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো এবং অঙ্গ সংগঠনগুলোকে পুনর্গঠন করা জরুরি।’
বৈঠক তারেক রহমান তেমন কথা না বললেও দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন।
বৈঠক উপস্থিত ছিলেন– মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
/বাংলা ট্রিবিউন!
0 মন্তব্যসমূহ