বোরো আবাদে দিনরাত ব্যস্ত বাঁশখালীর কৃষক

বি,এন ডেস্কঃ
বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো চাষ নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। ছড়ার পানি ও গভীর নলকূপের পানি দিয়ে দিনরাত সেচকাজে ব্যস্ত রয়েছে কৃষক। তবে কৃষি অফিসের দেয়া পানির মূল্য তালিকা উপেক্ষা করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ছড়ার পানির জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, এ বছর বাঁশখালীতে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। উপজেলার পুঁইছড়ি, চাম্বল, শীলকূপ, বৈলছড়ী, কালীপুর, সাধনপুর, পুকুরিয়া, বাহারছড়া, খানখানাবাদ, কাথারিয়া, ছনুয়া, শেখেরখীল, গন্ডামারা, সরল ও জলদী এলাকায় ৯ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমির ২ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড বোরো চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। বাঁশখালীতে চাষাবাদ হচ্ছে ব্রিধান- ৪৯, ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-৪৮, ব্রিধান-৬১, ব্রিধান-৬৭, ব্রিধান-৪০, এছাড়াও বিনা-১০, বিনা-৮ ধানের। কোন কোন ইউনিয়নে দো-ফসলি জমির ওপর বোরো চাষাবাদ হয়েছে। আবার লবণসহিষ্ণু এলাকায়ও ব্যাপক হারে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। চাম্বল, জলদী, বৈলছড়ী, সাধনপুর, পুঁইছড়ি, নাপোড়া, কালীপুর ও শীলকূপের আশপাশের ছড়ার পানি দিয়ে ব্যাপক এলাকায় কৃষকরা বোরো চাষাবাদ শুরু করেছে। সরকারিভাবে কৃষি অফিস থেকে বিদ্যুৎচালিত মিটার ও ডিজেল ব্যবহার করে গভীর ও অগভীর নলকূপের পানি ব্যবহার এবং প্রধান সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে বিদ্যুৎচালিত সেচ যন্ত্র ব্যবহারকারীদের কৃষি জমিতে পানি সেচের মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ম উপক্ষো করে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত নলকূপের মালিকরা কৃষকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অধিক টাকা আদায় করে নিচ্ছে। কোন কোন জায়গায় নলকূপের মালিকরা কৃষকদের জমি নিয়ে নিজেরাই জমি চাষাবাদ করছে।
বৈলছড়ীর আবুল কালাম ও বজল আহমদ জানান, বোরো মৌসুমে প্রতি কানি জমিতে ট্রাক্টর খরচ ২ হাজার টাকা, রোপণ ২ হাজার টাকা, সার ও বিষ ২ হাজার টাকা, পানি ৬ হাজার টাকা, জমিন লাগিয়ত ২-৩ হাজার টাকা, ধান কাটা ২ হাজার টাকা, সর্বমোট কৃষকের কাছে খরচ হয় ১৬-১৭ হাজার টাকা। বাজারে ধানের মূল্য যদি উচ্চ থাকে তাহলে কৃষকরা লাভবান হবে। অন্যথায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ধানের মূল্য যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে কৃষকরা বাঁচবে। চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী বলেন, চাম্বল এলাকায় ছড়ার পানির ওপর অধিকাংশ কৃষক নির্ভরশীল। ছড়ার পানি বিক্রির ব্যাপারে বিভিন্নজনের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। অনেক কৃষককে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে কৃষিজমিতে রোপিত ধানের চারাগুলো লাল বর্ণ ধারণ করেছিল। কৃষকদেরকে পটাশ ও ইউরিয়া সার মিশ্রণে একসাথে ছিটানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে কৃষকরা লাভবান হয়েছে।
বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুৎ-১ ডি.জি.এম নাঈমুল হাসান বলেন, বাঁশখালীতে বোরো চাষাবাদে প্রতি ইউনিট মাত্র ৪ টাকা মূল্যে কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে। বোরো সেচ জমিতে বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ হয়েছে। পূর্বে কৃষকদের ৪৫০ বিদ্যুৎ মিটার ছিল। চলতি বছর ২০১৯ সালে নতুন সংযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে আরো ১০০ গ্রাহক। প্রতিটি এলাকায় কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লাইন থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এখন বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ