বি,এন ডেস্কঃ
বঙ্গোপসাগরের মধ্যে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের লোকসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এখানে আছে একটি উচ্চবিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২৬৪ শিক্ষার্থীর এই জিনজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক মাত্র একজন।
বঙ্গোপসাগরের মধ্যে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের লোকসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এখানে আছে একটি উচ্চবিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২৬৪ শিক্ষার্থীর এই জিনজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক মাত্র একজন।
কোনো কাজে শিক্ষক বাইরে থাকলে বন্ধ থাকে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের অনেকেই নেমে পড়ে পর্যটকদের ব্যাগ–লাগেজ গোছানোর কাজে।
অতি
সম্প্রতি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, একমাত্র শিক্ষক মোহাম্মদ রফিক (৩২)
চতুর্থ শ্রেণির পাঠ নিচ্ছেন। প্রথম ও শিশুশ্রেণিতে (নার্সারি) ক্লাস নিচ্ছে
পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রী সানজিদা বেগম ও নাছিমা আক্তার। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়। শিশুদের
নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি কামপ্রহরী জয়নাল আবেদীন।
মোহাম্মদ রফিক একজন সহকারী শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বেও
তিনি। তিনি বলেন, তাঁর একার পক্ষে একসঙ্গে ছয়টা ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে
না।
বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে ৭৩ শিক্ষার্থী। সবাই
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থী। পঞ্চম শ্রেণির সানজিদা ক্ষোভের সুরে বলে,
‘এখানে এমপি–মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে না, তাই এ অবস্থা।’ নাছিমা
বলে, ‘সেন্ট মার্টিনের অপরূপ সৌন্দর্যে সবাই মুগ্ধ, কিন্তু রহস্যজনক কারণে
এখানে শিক্ষকেরা থাকতে চান না। আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে চাই।’
বিদ্যালয়ে প্রতিবছরই কমছে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা।
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে ৭৫ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৫৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩২
জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৯ ও শিশুশ্রেণিতে মাত্র ১২ জন।
বিদ্যালয়ে বর্তমানে দুটি ভবন রয়েছে। তিনতলা ভবনটি ব্যবহৃত
হচ্ছে সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে। অবশ্য এখন এখানকার সবগুলো কক্ষই পুলিশ
ফাঁড়ির দখলে। আর দ্বিতল ভবনটি ব্যবহৃত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে।
বিদ্যালয়ে সাতটি পদের মধ্যে শিক্ষক ছিলেন চারটিতে। এর
মধ্যে প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ২০০৯ সালে অবসরে যান। ২০১৫ সালে বদলি
হয়ে যান আরেক সহকারী শিক্ষক এনাম উল্লাহ। অপর দুই সহকারী শিক্ষকের মধ্যে
নুরুল আলম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গত প্রায় তিন বছর বিদ্যালয়েও যান না।
২০১৮ সালের মাঝামাঝি ফয়সাল উদ্দিন মাহমুদ নামে এক সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ
দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিনের মাথায় তিনিও এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণে চলে যান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, ‘কিছুদিন আগে সেন্ট
মার্টিন গিয়ে শিক্ষকসংকটের বিষয়টি দেখে এসেছি। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দিলে
ওই বিদ্যালয়ের শূন্যপদগুলো পূরণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
সুত্রঃ প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ