আমরা প্রায়ই নারীদের নিয়ে কথা বলি ৷ আসলে নারী নয় আমরা কথা বলি মানুষের।

আমাদের পুরুষ এবং পুরুষ মগজের  সভ্য নারীগণ বলেন ছিলা কলা কেউ খায় না ৷ আমার তখন বেশ ভালো লাগে ৷ কারণ তারা ছিলা কলা বলতে বোঝান নারীর পোষাক স্বাধীনতাকে, যারা তাদের বাধ্য নয় ৷ আর খারাপ লাগে তাদের মা বোনদের জন্য কারণ ছিলা কলা যেহেতু কেউ খায়না,  সেহেতু খাওয়ানোর জন্য তারা তাদের মা বোনদের বোরকা হিজাব পরিয়ে একেবারে পরিপক্ক করে রাখে ৷ কী সুন্দর মগজ তাইনা এদের !?

সমস্যাটা হয় তখন,  যখন এরা বলে পর্দা না করলেতো ধর্ষণ হবেই ৷ কিভাবে হবে! ছিলা কলাতো কেউ খায় না, তাইনা ? তোমরা খাওয়ানোর জন্য এত আয়োজন করে খোসা টোসা সহ তৈরী করে রেখেছো, তাহলে যা অখাদ্য তা খাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা ৷

ও হ্যাঁ মনে পড়েছে!  তোমাদের মুখ পাছাতো এক ৷ তোমাদেরতো উদাহারণের শেষ নাই ৷ অর্থ্যাৎ বিচার মানি তাল গাছ আমার ৷ নারীকে ঢাকতে কলা, আর ধর্ষণ ঢাকতে মাছি ৷ মানে তাদের যুক্তি একদিকে বলবে ছিলা কলা খায়না,  অন্যদিকে বলবে ঢাকনা খোলা থাকলে মাছিতো আসবেই ৷ তার মানে তাদের কাছে নারী মানেই খাবার ৷পার্থক্য কেউ ছিলে বা ঢাকনা খুলে খাচ্ছে আর কেউ ছিলা আর খোলা খাবার খাচ্ছে ৷
উমমমন খুব ট্যাস.......... তাই না ?

কত বড় উন্মাদ জানোয়ার মূর্খ হলে নারীকে খাবার বানানো যায় ? সে নারী তাদের মা, তাদের বোন, তাদের মেয়ে ৷ বোন মেয়ে থাক আর না থাক,  মা ছাড়া কেউতো আসোনি!  তবে সে মাকে খাবারের সাথে তুলনা করে কিভাবে ? তারা মানুষ!  ওহ না,  তারাতো মানুষ না,  মাছি ৷ তাও গুয়ের মাছি ৷ ঢাকনা না থাকলে মাছি উড়ে আসে,  সে মাছি কারা ? যারা নারীর পক্ষে কথা বলে ? যারা নারী স্বাধীনতা সহ মানুষের কথা বলে ? যাদের উলঙ্গ মূর্তি, ভাস্কর্য দেখলে সমস্যা হয়না ? যাদের নারী যাই পরুক আর না পরুক কোন সমস্যা হয়না তাদের ? নাকি যারা ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে বলে নারীর দোষ, নারীর পোষাকের দোষ, যাদের উলঙ্গ মূর্তি দেখলেও দাড়িয়ে যায়, যারা নিচের মাথা বাসে নারীর কাঁধে তুলে দেয় তাদের !? মনে করে তারাই লিঙ্গ ওয়ালা আর সব হিজরা ৷  আপনাদের পোষাক নিয়ে যখন দেখি উন্মাদ লাফান তখন বুঝে যাই আপনারা কারা! আরে ভাই আপনাদের উদাহারণ নিয়ে আপনাদের বলি !  ঢাকনা ছাড়া বা ছিলা কলা খেতে জোর করা লাগে না,  ভালোটা খেতে হয় পয়সা দিয়ে নয়তো চুরি ডাকাতি করে ৷ সুতরাং মগজে ঢুকিয়ে নিন আপনারা কিনা ?

কই বাংলাদেশে নাস্তিক বা নারীবাদী পুরুষরা কেউ আপনাদের মা বোনদের কাঁধে তুলে দিয়েছে ? বুক টিপে দিয়েছে ? পাছায় হাত দিয়েছে ? ধর্ষণ করেছে ? এগুলো করছে কারা ?  যারা করছে তারা আপনাদেরই লোক ৷ যারা চিল্লালো মাদ্রাসায় কিংবা ওয়াজে তারা,  যারা তাদের মানে তারা ৷

নাস্তিক বা নারীবাদী নারীদের কেউ আপনাদের যৌন আহবান করেছে   ? আপনাদের খুলে দেখিয়ে ডেকেছে ?  আপনাদের বাপ দাদাকে শুতে বিছানায় ডেকেছে ? একটা নাস্তিক নারীবাদী মেয়েকে ধর্ষণতো দূর!  যৌন হয়রানি করতে পারবেন ? যেটার গরম দেখান সেটা টেনে ছিঁড়ে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবে না!
পারেন কাদের!  কারা হয়রানির শিকার হয়!  কাদের ধর্ষণ করেন!? তাও আপনাদের মা বোন,  যাদের আপনারাই এসব করার জন্য ঢাকতে ঢাকতে জায়গা রাখেননি ৷ চাননি তারা বের হোক ৷ আর এসব করার জন্যই আপনাদের এতো এতো তাল বাহানা ৷ ঐ যে খোসা ওয়ালা কলা বানিয়ে সবার উপযুক্ত করেছেন যেহেতু ছিলা কলা খায় না ৷ জানেন যে নারীরা একবার জাগলে আপনাদের রক্ষা নেই ৷

তিন মাসের বাচ্চা, ছয় মাসের বাচ্চা, এক বছরের বাচ্চা, সাত বছরের বোরকা পরিহিত বাচ্চা হতে বুড়ি পর্যন্ত বাদ যায়না ৷ কার নিরাপত্তা দিলেন ? তাদের ছোট হতেই বোবা বানিয়ে ফেলেন,  ঘরকুণো করে রাখেন ৷ বড় গলায়তো বলেন যে পর্দা করেনা তাই ধর্ষণ হয়,  মাদ্রাসার শিক্ষিকা কি পর্দা করেনি ? তাকেও ধর্ষণ হতে হলো কেনো ? আপনার বোন কন্যা সেখানে রক্ষা পাবে ভেবেছেন ?  আপনি নিজে অন্যের মেয়ে নিয়ে যেমন করেন,  আপনার ঘর নিয়ে করে অন্যরা ৷ আরে ভাই এ দেশে কেউতো উলঙ্গ হাঁটেনা,  হয় কেউ শর্ট কেউ লং পরে ৷ ঐ সানি লিয়নরাতো না পরেও থাকে ৷ দেখি কার বাপের সাহস ধর্ষণ করে!  কেটে মুখে ধরিয়ে দিবে না ? আপনারা পুরুষরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুকুরের মত পস্রাব করেন,  তখন কোন মেয়ে ঝাপ দিয়েছে না হয়রানি করেছে ? যেমন ইচ্ছা পোষাক পরেন,  আপনাদের নিয়ে কিছু বলেছে ? আপনাদের এত মাথা ব্যাথা কেনো? আপনারাতো রাস্তায় অতর্কিত কোন মেয়ের ব্রার ফিতা বের হয়ে গেলেও সেখান থেকে চোখই সরান না ৷ আবার কোন মেয়ের অন্তর্বাস শুকাতে দিলে সেই সামান্য সুতোর কাপড় ও ধর্ষণ হয় ৷ সারা দুনিয়া বলে বেড়ান নারী হেমন নারী তেমন আর কোন মেয়েকে গোসল করতে দেখলে ফাঁক ফোঁকর দিয়ে ওঁত পেতে থাকেন ৷ ভিডিও করেন এইতো চরিত্র ৷ আপনাদের চিনিনা ?

হ্যাঁ মেয়েদের খারাপ আছে,  অবশ্যই আছে ৷ সেটা হলো এই আপনাদের জুতা খুলে মুখে কষে দেয়না ৷ গাড়িতে ঘঁষলে ভিডিও করে কিন্তু অন্ডকোষ ফাঁটিয়ে দিয়ে আসেনা ৷ লাথির উপরে রাখেনা ৷ এটাই তাদের দোষ,  জানোয়ারকে পশ্রয় হিংস্রতাকে পশ্রয় দেয় ৷ এ দেশে আইন দিয়ে কিছু হবেনা, নারী ধর্ষিত হবে আর মরবে ৷ নারীর নিরাপত্তা নারীকে নিতে হবে ৷ মাইরের উপর রাখলে সব ঠিক হয়ে যাবে ৷ বিচার নিজের হাতে নিতে হবে ৷ নারীকে স্বাধীনতা অধিকার এসব আগে বুঝতে হবে ৷ পুরুষতান্ত্রীক সমাজের গায়ে চপেটাঘাত করতে হবে ৷ সব মানুষই স্বতন্ত্র ৷ সে কি করবে না করবে,  কি পরবে না পরবে সে ঠিক করবে ৷ এমনকি কোন পুরুষ পুরুষকে,  কোন নারী নারীকে ঠিক করে দেবেনা ৷ মূলত ঘাড়ের রগ বাঁকা করা চাই,  জানোয়ারকে উচিত শিক্ষা দিতে ৷ পুরুষতন্ত্রের মগজ থাকে নিচে৷ রোগ যেখানে আঘাতটা হোক সেখানে ৷ তাহলে তুমি বাঁচবে, বাঁচবে ভবিষ্যত ৷

গাজী গোফরান
খানখানাবাদ, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ