গাজী গোফরানঃ প্রতিনিয়ত ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী ফজল কাদের। ইয়াবাসহ প্রশাসনের হাতে একাধিকবার ধরা পড়লেও রহস্যজনক ভাবে সে পার পেয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ আলোচিত একটি ইয়াবা মামলার চার্জশীট থেকে তার নাম বাদ পড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। অবশ্য, পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ফজল কাদের একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী হলেও এই মামলায় সে জড়িত নেই।
আইন-শৃংখলা বাহিনীর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ (মাঙ্গালাপাড়া) এলাকায় মেরিন ড্রাইভ রোড থেকে কক্সবাজারমুখি একটি সিএনজিকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা। পরে ওই সিএনজিতে তল্লাশি করে ৩৯ হাজার ৬শ’ পিস ইয়াবা, একটি মোবাইল সেট ও ২৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। এসময় উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানি নুরার ডেইল গ্রামের আহমদ শরীফ নামের এক যুবক কে আটক করা হয়। আটক আহমদ শরীফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যৌথ বাহিনীকে জানিয়েছেন, জব্দ হওয়া ইয়াবাগুলো উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে ফজল কাদেরের বাড়ি থেকে কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সে আরও জানিয়েছেন, এর আগেও সে ফজল কাদের ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে অসংখ্যবার ইয়াবার চালান কক্সবাজার নিয়ে গেছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী র্যাব কর্মকর্তা মো. আজিজুল করিম বাদী হয়ে রামু থানায় একটি মামলা নং (০২/৩২১) দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় রামু থানার এসআই কিশোর। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তিনি গত ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে ইয়াবাসহ আটক আহমদ শরীফ ও ফজল কাদেরের শাশুড়ি আমিনা খাতুনের নাম থাকলেও বরাবরের মত ফজল কাদেরের নাম বাদ পড়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ তার সেকেন্ট ইন কমান্ড উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনারপাড়া গ্রামের মাস্টার জাকের হোসেনের ছেলে লুৎফর রহমানের মধ্যস্থতায় ইয়াবা কারবারের মামলা থেকে ফজল কাদেরের নাম বাদ দিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামু থানা পুলিশের এসআই কিশোর বলেন,‘মামলা এজাহারে ফজল কাদেরের সুনির্দিষ্ট নাম উল্লেখ নেই। ইয়াবাগুলো ফজল কাদেরের বাড়ি থেকে আনা হলেও সেগুলোর তার শাশুড়ির কাছ থেকে এনেছে বলে জানিয়েছে আটক আহমদ শরীফ। সুতরাং ফজল কাদেরের জড়িত না থাকার বিষয়টি পরিষ্কার। এজন্য আসামি পক্ষ থেকে পুলিশ কোনও ধরণের সুবিধা আদায় করেনি।’
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আবুল মনসুর বলেন,‘ইয়াবাগুলো উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের স্ত্রী ও ফজল কাদেরের শাশুড়ি আমিনা খাতুনের কাছ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাই আমরা তার শাশুড়িকে মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করেছি। এছাড়াও আমার বাড়ি তাদের এলাকায় না। আমি জানবো কিভাবে ফজল কাদের ইয়াবা ব্যবসায়ী নাকি ডাকাত? এগুলো আমার দেখার বিষয় না। সেটা দেখবে উখিয়া থানা পুলিশ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.ইকবাল হোসেন বলেন,এমন তো হওয়ার কথা নয়! বিষয়টি আমি দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
0 মন্তব্যসমূহ