সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় তোলপাড়। গোপনে ধারণকৃত ভিডিওতে ২ জনে হাতে অস্ত্র ও ৩ জনে হাতে কিরিচ নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা কালে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে অস্ত্রধারীদেরকে বাঁধা প্রদান করতে দেখা যায়।
জানা যায়, গত ১৪ই জুন শুক্রবার সন্ধ্যা অনুমান ০৬:৩০ ঘাটিকার সময় বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ সরল এলাকায় নুর মোহাম্মদ গ্রুপের শের আলী ও আব্দু শুক্কুর প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের উপর গুলি চালায়। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজন লোককে অস্ত্র আর কিরিচ হাতে মহড়া দিতে দেখা যায়। উক্ত ঘটনায় একই এলাকার আশরাফের পুত্র হোসেন (৩৫), আলীর পুত্র লোকমান (১২) ও খলিলের পুত্র ফরহাদ (১৮) গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা যায়।
প্রসংগত, গেল বছর ২ই নভেম্বর বিকেল বেলা দক্ষিণ সরলের মৌলনা খলিলুর রহমান মাদ্রাসা সংলগ্ন রাস্তার উপর চিংড়ি ঘের নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সরলের কাজিরখীলের নুর আহাম্মদ গ্রুপের লোকজন জাফর গ্রুপের লোকজনের উপর অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ঐ সময় জাফর গ্রুপের লোকজন একই রাস্তার পাশে অবস্থিত মরহুম মাষ্টার কবির আহমদের ঘর সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নুর আহম্মদ গ্রুপের লোকজন হামলা চালাইলে উক্ত ঘরের হালিমা, শাহেনা ও হোসনেয়ারা নামের তিন সাধারণ মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়।
এঘটনায় হালিমার ছেলে আবুল কালাম বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় হামলাকারী নুর মোহাম্মদ, শের আলী, জসিম, শুক্কুর, মহিব্বুল্লাহ, ওসমান, সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
কালামের পরিবার জানায়, উক্ত মামলা দায়ের করার পর থেকে আসামীগন প্রায় সময় মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য প্রাণ নাশ সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসতেছিল। পরে গত ১৪ই এপ্রিল মধ্যরাত ৩ ঘটিকার দিকে আবুল কালাম তার চাচার ডায়েরিয়ার ঔষধের জন্য দক্ষিণ সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে তার ভাই হাসানের ফার্মাসির সামনে গেলে পূর্ব থেকে ওতপেতে থাকা তার মামলার আসামীগন আবুল কালামকে গুলি করে মেরে ফেলে। পরে হত্যাকারী নুর মোহাম্মদ, শের আলী, জসিম, শুক্কুর, মহিব্বুল্লাহ, ওসমান সহ ২১ জনকে আসামী করে আবুল কালামের ভাই হাসান বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আসামী ওসমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বাকিরা এখনো এলাকায় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া সহ পুনরায় প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলে আবুল কালামের পরিবার জানান। বর্তমানে আবুল কালামের পরিবার লোকজন অনিশ্চিত জীবন-যাপন করতেছে এবং পরিবারের কিছু সদস্য ভয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস করতেছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আবুল কালাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী শের আলী ও আব্দু শুক্কুরকে অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণ করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কারণে তাদের চলাফেরা ও জীবনযাপনে বিভিন্ন বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত এবং প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছে। এব্যাপারে প্রশাসন চাইলে অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীকে বিপদ মুক্ত ও সুন্দর জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দিতে পারে।
এব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম বাঁশখালী নিউজকে জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ১৪ই জুন অর্থাৎ শুক্রবারে সরলে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নয়। সরলে শুক্রবারে ঘটনা ঘটেছিল রাতে কিন্তু ভিডিওটা দিনের ঘটনা। এছাড়াও সরল এলাকার অস্ত্রদারীদের সহ ভিডিওতে প্রকাশ্য অস্ত্রদারীদের আটক করার জন্য অভিযান চলমান আছে।
0 মন্তব্যসমূহ