চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রাস্তার ইট খুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাঁশখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ভাদালিয়া বিল্লাহ পাড়ার প্রায় সহ¯্রাধিক লোকের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম দৈর্ঘ্য অর্ধ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৬ ফুট বিশিষ্ট সড়কটির প্রায় ৮শ ফুট অংশে ইট বিছানো ছিল। বর্তমানে উক্ত সড়কটির পুরো অংশে মাটি দিয়ে সংস্কার ও যে পর্যন্ত ইট বিছানো ছিল ঐ পর্যন্ত ইট দিয়ে সংস্কারের টেন্ডার আহবান করা হলে পৌরসভার পক্ষ থেকে সরাসরি ওই কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করা হয়। এলাকাবাসীদের অভিযোগ সড়কটির সংস্কারের নামে পুরাতন সব গুলো ইট খুলে নিজ বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুর রহমান। যার ফলে বর্তমান বর্ষা মৌসুমে সড়কটির পুরো অংশ কাদামাক্ত হয়ে সম্পূর্ণ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী প্রায় সহ¯্রাধিক জনসাধারণ।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৯ জুন) ১নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীদের গণ স্বাক্ষর পূর্বক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়েরের
স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, পুরো সড়কটি সম্পূর্ণ ইট খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্কেভেটর বসিয়ে কিছু অংশে মাটি ভরাট কার্যক্রম চলছে। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি দেখে স্থানীয় শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ব্যবসায়ী আনছুর আলী, নুরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, স্থানীয় ভাদালিয়া বড় মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা খলিলুর রহমান, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ, মাহামুদুল্লাহ, নমিউল হক তোফাইলসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, বিল্লাহ সড়কটির ভাদালিয়া বড় মাদ্রাসা হতে রাশেদ আলী সওদাগরের উত্তর পার্শ্বে শের আলীর দোকান পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তার ইট খুলে লুটপাটের উদ্দেশ্যে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায় কাউন্সিলর আবদুর রহমান। তারা বলেন, রাস্তা কাজ করতে নিয়মানুযায়ী পুরাতন ইট গুলো তুলে স্থানীয় যেকোন এক জায়গায় মজুদ করে রাখা। পরবর্তীতে রাস্তায় মাটি ভরাটের পর পুনরায় ইট গুলো বিছানোর নিয়ম থাকলেও উক্ত ইট গুলো নিজস্ব সম্পত্তির মত ট্রাকে করে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছে কাউন্সিলর আবদুর রহমান।
কাউন্সিলর আবদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাস্তার সংস্কারের জন্য পুরাতন ইট গুলো খুলে আমানত স্বরূপ আমার বাড়ীতে রাখা হয়েছে। রাস্তার পাশে কিংবা স্থানীয় কোন খোলা জায়গায় ইট গুলো স্তুপ করে রাখলে চুরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আনছুর আলী সহ বেশ কয়েকজন আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। রাস্তার টেন্ডারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি মেয়রের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলে ফোন কেটে দেন।
সংরক্ষিত ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রুজিনা আক্তার জানান, রাস্তা সংস্কার করার নামে পুরাতন ইট গুলো এইভাবে বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাস্তার ইট খুলে লুটপাট করার অভিযোগ সত্য নয়। রাস্তা সংস্কারের জন্য সামায়িক ভাবে উক্ত ইট গুলো হেফাজতে রাখার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায়। কাউন্সিলর নিজের বাড়ীতে ইট গুলো নিয়ে যদি অনিয়ম করে থাকে তাহলে পৌরসভার তত্বাবধানে উক্ত ইট গুলো নিয়ে আসা হবে। রাস্তাটি সংস্কারের ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ