মোহাম্মদ এরশাদঃ
প্রেমের টানে সুদুর সিলেট থেকে প্রেমিকের সাথে বাঁশখালীতে দেখা করতে এসে ধর্ষনের শিকার হয়েছে এক যুবতী। মামলায় ওই ধর্ষণের পেছনে সহযোগী হিসেবে তার মামাত ভাই এবং ফুফাত ভাই জড়িত বলে দাবী করা হয়।
গত রবিবার মামলার বাদী বিউটি আক্তার বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। মামলায় এক জনকে মূল আসামী করা হলেও বাদী আরো ২ জন সহযোগী রয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়,সিলেট হবিগঞ্জ জেলার হবিগঞ্জ থানার সদর এলাকার ৬ নং রায়ছুড়া ইউনিয়নের উচাইল শংকর পাশা গ্রামের মৃত নজির হোসেনের কন্যা বিউটি আক্তার মনি (২২) চাকুরী লক্ষে ২০১৪ সাল থেকে ডুবাই যাই। সেখানে তিনি ওয়াইটার কোম্পানীর আওতাধীন রেস্টুরেন্টের মেসিয়ার হিসেবে কাজ করেন।
বিগত ২ বছর পূর্বে ডুবাইতে উক্ত রেস্টুরেন্টে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের মিনজিরতলা ৫ নং ওয়ার্ডের মনসিকদার বাড়ীর নুরুল ইসলাম সিকদারের পুত্র মোঃ রুবেল সিকদার নাস্তা করতে গেলে বিউটির সাথে তার পরিচয় ঘটে। রুবেল বিগত ৮ বছর যাবৎ দুবাইতে প্রবাসী হিসেবে কর্মরত ছিল।এক পর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস জমে গেলে রুবেল তাকে বিয়ের প্রলোভনে ১ বছর যাবৎ দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করবে বলে গত রমজানের ১ মাস পূর্বে বাংলাদেশে পাটিয়ে দেয়।এদিকে রুবেল গত ২৫ জুন ২০১৯ ইং বাংলাদেশে আসলে তার সাথে সামজিকভাবে বিবাহ হবে বলে আশ্রাস প্রদান করে তাকে চট্টগ্রামে আসতে বলে।সে ও তার কথা মত গত ৭ জুলাই হবিগঞ্জ থেকে বাসযোগে চট্টগ্রাম অলংকার মোড় এসে পৌঁছলে তাকে রুবেল রিসিভ করে সিএনজি যোগে নতুন ব্রীজ নিয়ে আসে।
পরবর্তীতে বিউটির কাছে রক্ষিত ৩ লক্ষ টাকা সে নিয়ে নে।পরে তাকে একটি টিকানা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাসে তুলে দেয়।তার দেওয়া টিকানা অনুযায়ী সে বাঁশখালী তার বাবার বাড়িতে এসে পৌছলে বাড়িতে কেউ না থাকায় সে বাইরে দাড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পরে রুবেলের ফুফাত ভাই পরিচয় দিয়ে তাকে পাশ্বর্বতী তার আরেক ফুফির বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে রুবেল ও আসে।
পরবর্তীতে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। পরের দিন তাকে পুনরায় চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে বিয়ের কথা তুল্লে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্ন হয়।একপর্যায়ে এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তাকে তার মা বাবা ভাই বোন সবাই মারধর করে নির্যাতন চালায়।পরবর্তীতে বাঁশখালী থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বাঁশখালী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের চৌকিদার বেদার ও তার অপরাপর সহযোগীরা ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে ওই যুবতী বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় ১জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ ব্যাপারে ধর্ষিতা জানান,রুবেল দুবাই থাকা অবস্থায় আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অসংখ্য বার দৈহিক সম্পর্ক করে।যার ফলে ২ বার আমাকে গর্ভবতী হতে হয়েছে।সে আমাকে দেশে গিয়ে সামাজিক বিয়ে করবে বলে আমার গর্ভপাত নস্ট করে।
দেশে এসে বিবাহ করার কথা বলে আমাকে তার গ্রামে নিয়ে গিয়ে আবারো ধর্ষন করে। পরবর্তীতে বিয়ের কথা বল্লে তার মা, বাবা, ভাই বোন সহ সকলে মিলে আমাকে মারধর করে।ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আমাকে তাদের কবল থেকে থানা পুলিশ উদ্ধার করে।যার ফলে আমি নিজে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় ০৭ /১৯ ধারা ২০০০(সংশোধন/০৩) এর ৯(১) ধারা মতে মামলা দায়ের করি। বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম মজুমদার জানান, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
0 মন্তব্যসমূহ