নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ও সরল এলাকায় এস আলম গ্রুপের নির্মানাধীন বেসরকারি পর্যায়ের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের জায়গার ক্ষতিপুরণ বাবদ ১২০ পরিবারের প্রায় দেড় কোটি টাকা প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে উপজেলার গন্ডামারা এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইউসুফ আলীর পুত্র মোহাম্মদ আলমগীর(৪৫) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মোঃ শহিদুল্লাহ্।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ও সরল ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ বঙ্গোপসাগরের চরে ঝাউ বাগান, খেত-খামার, চাষাবাদ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করার সময় উক্ত জায়গা অধিগ্রহণ করেন।
ভূমিহীন সমিতির ১২০ জনের সদস্যকে জনপ্রতি এক লক্ষ ৭ হাজার টাকা করে এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে ভূমি বাবদ ক্ষতিপুরণ দেয়। ১২০ জনের প্রায় দেড় কোটি টাকা আলমগীর নামের এক ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থদের ৪/৫ হাজার কাউকে ২০ হাজার করে দিয়ে বাকী টাকা তারা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি তাদের পাওনা টাকা পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ৩০ জুলাই অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বিষয়টি তদন্ত করে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদারকে নির্দেশ দেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী জলদী শাখার কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে আলমগীর ভূমির টাকা আত্নসাৎ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কার্যালয়ের দায়েরকৃত অভিযোগে উপজেলার গন্ডামারা এলাকার আবুল কালাম, গিয়াস উদ্দীন, মোহাম্মদ হোছাইন, মো. আনোয়ার, মো. বাদশা, ইউনুচসহ আরো কয়েকজনকে স্বাক্ষী রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমির টাকা না পাওয়ার বিষয়ে মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, এলাকার শত শত মানুষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে জায়গা দিয়ে দিলেও এখনো টাকা বুঝে পায়নি।এলাকার গরীব অসহায় মানুষের দূর্বলতাকে পুঁজি করে আলমগীর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তিনি জানান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানার জন্য আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি নিজেও একজন সমিতির সদস্য বলে দাবি করেন। অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইলে কথা বলতে পারবে না, অফিসে এসে সাক্ষাতে কথা বলবে বলে বলেন। মোবাইলে বক্তব্য দেওয়া কথা আবারও বললে তিনি বলেন, এস আলম গ্রুপ থেকে কোন টাকা পয়সা দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন, এসব বিষয় নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকিও দেখান, অফিসে এসে সরাসরি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গন্ডামারা এলাকার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অধিগ্রহণ হওয়া জায়গার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছি। তবে এটি ফৌজদারী অপরাধ হওয়ায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ওসি বাঁশখালীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ইউএনও অফিস থেকে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তার হাতে এসেছে বলে জানায়। বিষয়টি তদন্ত চলছে তদন্তের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ