যুগে যুগে আবির্ভাব হচ্ছে ভিন্ন ধরনের প্রতারক। সাধারণ মানুষের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন পন্থায় তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমন একজন প্রতারক হলেন বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফকিরাবাপের পাড়ার ফজলুল করিমের ছেলে জয়নাল আবেদিন প্রকাশ চুনচু। তাকে দক্ষিণ বাঁশখালীর মানুষ প্রতারক চুনচু নামে চেনে। তার প্রতারণার কৌশল ভিন্ন। সে নিত্য নতুন কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এই চুনচুর প্রতারণার কাহিনী শুনলে রীতিমতো হতবাক হয়ে যাবেন যে কেউ। একজন লবণ পরিবহন শ্রমিক থেকে চুনচু হয়ে উঠেন ভয়ংকর প্রতারক। সে ভাবতে লাগলো লবণ পরিবহন করে টাকা রোজগার করা অনেক পরিশ্রমের কাজ। কিভাবে সহজ উপায়ে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করা যায় তা নিয়ে ভাবতে থাকলো। পরে পরিকল্পনা করলো অচেতন বড়ি সেবন করে রাস্তায় যত্রতত্র শুয়ে থাকবে।
হৃদয়বান ব্যক্তির চোখে পড়লে তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাবে। অতঃপর চিকিৎসা করিয়ে টাকা-পয়সা দিবে। যেই ভাবা সেই কাজ। আজ থেকে বেশ কয়েক মাস আগে অচেতন বড়ি নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পাড়ি জমায় চট্টগ্রামের নাজিরহাটে। সে সেখানে অবস্থান করার পর অচেতন বড়ি সেবন করে রাস্তার ধারে শুয়ে পড়ে।৷ জয়নাল প্রকাশ চুনচু অচেতন হয়ে শুয়ে থাকার এমন দৃশ্যটি স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর চোখে পড়ে। পরবর্তীতে তিনি চুনচুর ঠিকানা জানতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন। অবিরাম চেষ্টা করেও তিনি চুনচুর ঠিকানা বের করতে পারেননি। তাই তিনি দেরী না করে চুনচুকে ভর্তি করান নাজিরহাট মেডিকেলে। শুধু তাই নয়,তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলে যাতায়াত খরচ দিয়ে ছনুয়ায় পাঠিয়ে দেন। আসলে জনৈক সাংবাদিক জানতেন না যে,চুনচু প্রতারণার ফাঁদ পাঁততে এমন অভিনয় করে বেড়াচ্ছে।
এই ঘটনার রেশ না কাটতেই গত ১৫ই মার্চ তারিখে সাতকানিয়া মির্জাখীল এলাকায় একই কায়দায় হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। সে স্থান পরিবর্তন করে এমন প্রতারণার করছে দেদারসে।
সর্বশেষ, সোমবার (২৩ মার্চ) অচেতন বড়ি সেবন করে পটিয়ার মনসার টেক এলাকায় শুয়ে থাকে জয়নাল। এলাকার গনমান্য ব্যক্তিবর্গ তাকে উদ্ধার করে পটিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রেরণ করে।
তার নিজ বাড়ি ছনুয়া ৩নং ওয়ার্ডের ফকিরা বাপের পাড়া এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চুনচু ২০১৮সাল থেকে থেকে এই প্রতারণার ব্যবসায় নেমেছে। সে এভাবে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।"
সম্প্রতি তার ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জয়নালের ডাকনাম চুনচু। বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ার ফজল কাদেরের পুত্র। নিজে নিজে অচেতন ট্যবলেট খেয়ে মানুষের কাছ থেকে সহানুভূতি স্বরুপ টাকা পয়সা আদায় করে। এটাই নাকি ছেলেটার নেশা। সে কিছুদিন পরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অচেতনের বডি খেয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করে নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছনুয়া ৩নং ওয়ার্ডের এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে এ প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেন, "চুনচু আগে মানুষের বসতবাড়ির আসবাবপত্র চুরি করতো। কিছুদিন যাবত সে এই প্রতারণার ব্যবসাকে বেছে নিয়েছে। যার কারণে আমার জন্মভূমি ছনুয়ার মানুষের বদনাম হচ্ছে।"
তিনি আরো বলেন, "জনসাধারণের উচিত এই ধরনের প্রতারণার ব্যাপারে সচেতন হওয়া ও সবাই একজোট হয়ে প্রতারক চুনচুকে আইনের হাতে সোপর্দ করা।"
0 মন্তব্যসমূহ