চাম্বল ইউপি চেয়ারম্যান মুজিব এর বাড়ির পুকুর ঘাটে রসের আড্ডায় মত্ত সদ্য র্যাব-৭ এর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২৮ মামলার আসামি মোরশেদ। |
ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের ফলে ডাকাতের আস্তানায় র্যাব-৭ এর অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ ডাকাত নিহত হওয়ায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
বিশেষ সংবাদদাতাঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হকের ব্যক্তিগত মুঠোফোন (০১৭১২৯৮০০৮৪) হতে জনকন্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা জোবাইর চৌধুরীকে প্রাননাশের হুমকি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে | রবিবার সন্ধ্যা ৬ঃ৩৮ মিনিটে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার থেকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এলাকায় দেখামাত্র নাজেহাল পূর্বক প্রানে মেরে ফেলার এ হুমকি দেন তিনি | তাছাড়া আমাদের সংবাদদাতার পরিবার কেও দেখে নিবে বলে এইসময় উল্লেখ করেছেন | চেয়ারম্যান কতৃক ওই সংবাদকর্মীর মুঠোফোন (০১৭১৯৩৮১৮৬৮) নাম্বারে হুমকি প্রদানের অডিও বার্তা সংগৃহীত রয়েছে | এ ঘটনায় জনকণ্ঠ প্রতিনিধি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভোগছেন| চেয়ারম্যান মুজিব কতৃক প্রাননাশের হুমকির বিষয়টি বাঁশখালী থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার কে অবহিত করেন আমাদের সংবাদদাতা| জনকণ্ঠ প্রতিনিধি জোবাইর চৌধুরী সোমবার (৬ এপ্রিল) জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন|
ঘটনার সুত্রে জানাযায়, গত ২০১৯ সালে বাঁশখালীর চাম্বল ইউপির পূর্ব চাম্বল ছডারকুল পাহাডি এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল আস্তানা গডে তোলে | প্রথমে অবৈধ অস্ত্রধারী ডাকাতদল বনরক্ষীদে জিন্মী করে পাহাড়ের গাছ কর্তন শুরু করে | ডাকাতদলের বেপরোয়া গাছ কাটার ফলে চাম্বলের পাহাড় অনেকটা উজাড হয়ে পডেছিলো| গাছ কেটে পাহাড় উজাড করেও ডাকাতদলের তান্ডব থামেনি | ধীরে ধীরে পাহাড়ের মাটি কাটা, সরকারি পিএফ জায়গা দখল করে বিক্রি করাসহ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী মানুষের ঘর-বাড়িতেও হানা দিয়ে সর্বোত্র লুটপাট চালাতো|সাহস করে ডাকাতদলের সদস্যদের সাথে কোন মানুষ প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হতে হয় তাদের হাতে | ডাকাতদলের অস্ত্রের মহডায় পূর্ব চাম্বলবাসী এক প্রকার জিন্মী হয়ে পড়ে ছিলো |তাছাড়া ডাকাদলের ওই আস্তানায় স্থানীয় ওই চেয়ারম্যানের ডানহাত খ্যাত একাধিক মামলার পলাতক আসামি নুরুল কাদের নামের দূর্ধষ ডাকাতের মাধ্যমে মহেশখালী হতে অস্ত্র তৈরির কারিগর এনে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রস্তুত করা হতো | আর এইসব অপরাধের নেপথ্যে গডফাদার হিসেবে চেয়ারম্যান মুজিব সরাসরি জড়িত থাকায় ভয়ে দীর্ঘদিন মানুষ মুখ খুলতে পারেনি | তবে ওই এলাকায় বসবাসকারী কিছু শিক্ষিত ও সাহসী লোকজন পাহাড়ে সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী ডাকাতদল ও তাদের মদদদাতা হিসেবে চেয়ারম্যান মুজিবের নাম উল্লেখ করে র্যাব-৭, পুলিশ সদরদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বন অধিদপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন | এরই প্রেক্ষিতে জনকন্ঠের অনলাইনে ও দৈনিকে পত্রিকায় পাহাড়ি এলাকায় ডাকাতদলের আস্তানা ও বনজ সম্পদ উজাড় এবং অস্ত্রের মহডা দিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে জিন্মী করে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত করার ধারবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়| স্থানীয়দের অভিযোগ ও জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদ কে নজরে এনে ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই র্যাব-৭ বহদ্দারহাট ক্যাম্পের এ,এসপি কাজী মোঃ তারিক আজিজ এর নেতৃত্ব কৌশল অবলম্বন করে কয়েকটি টিম ওই পাহাড়ি এলাকায় ডাকাতদলের আস্তানায় ভিন্ন ভিন্ন পথ দিয়ে প্রথম অভিযান পরিচালনা করে| র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে | র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে ডাকাত সদস্যরা পিছু হটে পালিয়ে যায় | পরে ঘটনাস্থলে জাকের আহমদ নামে এক ডাকাতের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে র্যাব সদস্যরা |তাছাড়া ডাকাতদের আস্তানা হতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব | এ ঘটনার মাস না পেরুতেই একই এলাকায় ফের অভিযানে নামে র্যাব-৭ এর চৌকস দল| সেই অভি্যানেও র্যাব সদস্যদের সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে|ঘটনাস্থল হতে ডাকাতি ও হত্যাসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি মোঃ ইরান নামে এক ডাকাতের মৃতদেহসহ বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব | ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩য় দফা অভিযানে নামে র্যাব-৭ এর সদস্যরা | এ অভিযানেও ওই চেয়ারম্যান মুজিবের বাম হাত খ্যাত ৩১ জেলে হত্যাসহ ২৮ মামলার দুর্ধষ ডাকাত মোরশেদ বাহিনীর সাথেও র্যাব সদস্যদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে | বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ডাকাতদলের বাকি সদস্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল হতে মোরশেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা|র্যাব-৭ এর কয়েকদফা অভিযানের ফলে ডাকাত সদস্যরা গা ঢাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে | র্যাব-৭ এর এই অভিযানের ফলে চাম্বল পাহাডি এলাকায় শান্তি ফিরে পেয়েছে ওই এলাকার মানুষরা| অভিযান ফলপ্রসূ হওয়ায় র্যাব-৭ কে ফুলেল শুভেচছা জানিয়ে তাদের গাড়ি বহরে ফুলের বৃষ্টি ছড়িয়ে দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলো এলাকাবাসী | তবে ওই ডাকাতদলের গডফাদার খ্যাত চেয়ারম্যান মুজিব কে আইনের আওতায় না নেয়ায় পুনরায় ডাকাত সদস্যরা সুসংগঠিত হতে পারে এমন শংকায় শংকিত| রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক এ "Ahmed Hridoye " নামে একটি আইডি হতে চাম্বলের মাঠে ঘাটে চলছে জুয়ার আসর লিখে ছবিসহ আপলোড দেন| সেই স্ট্যাটাসে জনকণ্ঠ প্রতিনিধি জোবাইর চৌধুরী চাম্বলের বাস্তব চিত্র ও সাধারণ মানুষের মন্তব্যর ভাব প্রকাশ করে কমেন্ট করেন| তাও আবার চেয়ারম্যান মুজিব সংশ্লিষ্ট কোন আইডি বা পেইজে নয়| রবিবার হটাৎ সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে চেয়ারম্যান মুজিব তার ব্যক্তিগত মুঠোফোন হতে জনকন্ঠের প্রতিনিধি জোবাইর চৌধুরী কে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও প্রানে মারার হুমকি প্রদান করে |তৎক্ষণাৎ বিষয়টি বাঁশখালী থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার কে অবহিত করা হয়| তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে জনকন্ঠ প্রতিনিধি কে আশ্বাস প্রদান করেছেন।
0 মন্তব্যসমূহ