নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক আপন মায়াতে সাজানো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বাঁশখালী উপজেলা। বাংলালোকসাহিত্যের অন্যতম মালেকা বালুর স্মৃতি বিজড়িত মালেকা বানু দিঘী ও মালেকা বানু মসজিদ বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নকে আলোকিত করে রেখেছেন। এ সরল ইউনিয়নকে আলোকিত করতে আলোর মশাল নিয়ে জম্মেছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম মাস্টার কবির আহমদ মিয়াজী।
মরহম মাস্টার কবির আহমদ মিয়াজী ১ লা অক্টোবর ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নে সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারে জম্ম গ্রহণ করেন। পিতা : মরহুম আহমদ হোসেন মিয়াজী, মাতা : মরহুমা আয়েশা খাতুন । সরল আমিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুচনা লগ্নে তিনিই প্রথম মেধাবী ছাত্র হিসেবে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানাধীন তৈলারদ্বীপ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে বাঁশখালীর মুখ উজ্জ্বঁল করেন। ১৯৬৪ সালে পূর্ব গন্ডামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তাঁহার কর্ম জীবন শুরু হয়। ১৯৬৬ সালে জালিয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের দুঃসময়ে উত্তর সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি দেশ গড়ার অবদান রাখেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবির্ধ্বস্ত স্বাধীন এ দেশে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। উপকূলীয় অঞ্চল ও মুমূর্ষুময় এলাকা দক্ষিণ সরলে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালাতে নিজ উদ্যোগে পৌত্রিক ৩৫ শতক জমি দক্ষিণ সরল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ডেপুটি কমিশনারের বরাবরে সাব-রেজিষ্ট্রার্ড করে উল্লেখিত জমি প্রতিষ্ঠানের নামে নামজারি খতিয়ান সম্পন্ন করেন । ১৯৯২ -১৯৯৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি রেজিষ্ট্রার্ড এ অর্ন্তভুক্ত হয়। তাঁহার ব্যাক্তিগত অর্থায়ানে চার (০৪) জন শিক্ষকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। ১৯৯৮ সালে এ মহান ব্যাক্তি সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে অবসর গ্রহণ করার পর নিজ প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠদান দিতেন। ২০১৩ সালে জুন মাসে তাঁহার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি সরকারিভাবে স্বীকৃত লাভ করেন। বাংলাদেশ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে দক্ষিণ সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অন্যতম।
তিনি শিক্ষাকতার পাশাপাশি সংগঠন ও সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখেন। সরল লবণ সমিতিতে সততার সাথে এক টানা দশ (১০) বছর সাধারণ সস্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন। তাহাঁর সার্বিক সহযোগিতায় দক্ষিণ সরল সাইক্লোন সেন্টার (প্রশিকা) ও আব্দুস সোবহান মিয়াজী জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০১১ সালের ১৯ এ এপ্রিল রোজ মঙ্গলবার নিজ বাড়ীতে এই মহান ব্যক্তি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
0 মন্তব্যসমূহ