বাঁশখালীবাসীকে ঈদের শু‌ভেচ্ছা জানিয়েছেন দৈনিক পূর্বদেশ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি

মোহাম্মদ এরশাদঃ
প‌বিত্র ঈদ উল ফিতর উপল‌ক্ষে বাঁশখালীবাসী‌ ঈদের শু‌ভেচ্ছা জা‌নি‌য়ে‌ছেন দৈনিক পূর্বদেশ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম  দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক এবং মাষ্টার নজির আহমদ ট্রাস্টের সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান সিআইপি।


মুজিবুর রহমান সিআইপি তাহার ব্যক্তিগত ফেইসবুক পেইজে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন ঈদ এসেছে,আনন্দ নেই, কোলাকুলি হাত মেলানো নেই, ঘরে ঘরে গিয়ে খাওয়া শুভেচ্ছা বিনিময়ের নেই আয়োজন, ঈদগাহে প্রাণ চাঞ্চল্য উৎসব নেই,অপ্রত্যাশিত  ঈদ।

এবারের রমজান ঈদ যেন মহান আল্লাহ পাকের একটি অগ্নি পরীক্ষা,এই সংকটময় সময়েও ঈদুল ফিতরের বাঁকা চাঁদ পশ্চিমাকাশে প্রতি বছরের ন্যায়  উদিত হবে, কিন্তু এ চাঁদ আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে না, ঈদের চাঁদ দেখা নিছক উটকো বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়, অতীতের কিছু সুখ স্মৃতি অনুভবের বেদনাঘাত করে বিদায় নিবে,ঈদের দিন ঘরের দরজা বন্ধ করে অঝোর নয়নে কান্না করতেন হযরত ওমর (র.), খুশির দিনে কান্না কেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি বলতেন,যার রমজানের ইবাদাত কবুল হয়েছে তাদের জন্য ঈদ,পাপ মোচন হলে তাদের জন্য ঈদের আনন্দ, আমার ইবাদত কবুল হয়েছে কিনা সে ভয়ে কাঁদছি।

হয়তো আজকের করোনা মহামারি আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত,আমাদের আজ আনন্দের নয়,কান্নার দিন,মহান আল্লাহ পরীক্ষার সময়, তাওবার দিন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ঈদের দিন মহান আল্লাহ পাক ক্ষমা করার দিন,চলুন আমরা আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা প্রার্থনা করি,যিনি ক্ষমা করা ভালবাসেন, তিনি চাইলে পুরো বছর ঈদ (আনন্দময়) করে দিতে পারেন।

ঈদের শিক্ষা আছে, দর্শন আছে, তাৎপর্য আছে, এবারের ঈদের নতুন শিক্ষা, নতুন দর্শন আমাদের চোখ খুলে দিলো, দুনিয়ার সবকিছুর উপর মানুষের প্রভুত্বের অবসান ঘটিয়ে সকল সৃষ্টির উপর স্রষ্টার প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করতে প্রিয় নবী (স.)'র আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে আসার শিক্ষা দেয়,সাম্য ভ্রাতৃত্ববোধকে বুকে ধারণ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুঃখ বেদনা ভাগাভাগি করে অনাগত ঈদে আনন্দ ফিরে আনতে হবে।

সিয়াম ও ঈদের শিক্ষার মধ্যে এই তাৎপর্য নিহিত রয়েছে, সামর্থবান ব্যক্তিরা দুস্থ ক্ষুধার্ত মানুষের দুঃখ দুর্দশা অনুভব করে তাদের দিকে হস্ত প্রসারিত করা সিয়াম- ঈদের শিক্ষা এবং এই মুহুর্তে বড় এক জিহাদ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ মানুষের সেবাকে জিহাদের সমতুল্য বলে ঘোষণা করেছেন।

নামাজ রোজা হজ্জ যাকাতকে আমরা ইবাদত মনে করি, কিন্তু মানব কল্যাণকে অনেকে ইবাদত মনে করি না,অথচ আজান ইকামতে 'হাইয়া আলাসসালাহ'র পর 'হাইয়া আলাল ফালাহ' বাক্যটি উচ্চারণ করতে হয়, নামাজের সাথে কল্যাণের আহবানকে যুক্ত করেছেন, পবিত্র কোরানে মহান আল্লাহ পাক ৮২ স্থানে 'নামাজ প্রতিষ্ঠা করো এবং যাকাত প্রদান করো' কথাটি ঘোষণা করেছেন, নামাজের সাথে যুক্ত করে যাকাতের কথা,কারণ যাকাত মানব কল্যাণের জন্য নির্ধারিত, মানুষকে করা হয়েছে 'আশরাফুল মাখলুকাত' সৃষ্টির সেরা,সৃষ্টির সেরা হওয়ার কারণ আল্লাহ পাক পবিত্র কোরানে ঘোষণা করেছেন, কুন্তু খাইরা উম্মাতি উখরিজাত লিন্নাস' অর্থাৎ তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে মানুষের কল্যাণ করো,কল্যাণে শ্রেষ্ঠ অকল্যাণে নিকৃষ্ট।

আমার পরিবার এই কল্যাণ চেতনাকে কিছুটা ধারণ করার চেষ্টা করে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে, করছে, কতটুকু সফল হয়েছি বা হবো তা জানি না,কিন্তু মানবতার সেবা যেন মহান আল্লাহ পাক আমাদের দ্বারা করান সে প্রার্থনা তাঁর দরবারে সব সময় করি, কারণ তিনি তাঁর প্রিয় বান্দার সেবা সবার হতে গ্রহণ করেন না।

মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ উপহার রমজান বিদায় নিচ্ছে,যে মাসের প্রতিটি মুহুর্ত এক একটি পূণ্যের পর্বত,বিদায় নিচ্ছে পূণ্যময় পবিত্র ঈদুল ফিতর, এই বিদায়ের সাথে যেন সকল অকল্যাণ অশুভ অসুন্দরের বিদায় হয়, সে প্রার্থনা করি, সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ