মোঃ মনছুর আলমঃ নীতিমালা ভঙ্গ করে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় উত্তর চাম্বল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে চরম অনিয়ম করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঐ বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে পছন্দের লোককে সভাপতি দিয়ে একটি পকেট কমিটি গঠন করেন। বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা এই পকেট কমিটি অবিলম্বে বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। একই সাথে বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগের অনুলিপি জমা দেন।
বিদ্যালয়ের অভিভাবকের পক্ষে অ্যাডভোকেট নাজমুল আলম চৌধুরীর করা লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে কোন অনিয়ম হলে সেটি দেখার দায়িত্ব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার। যেহেতু একই অভিযোগের অনুলিপি সেখানে দেওয়ায় হয়, সেক্ষেত্রে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। এদিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু সুফিয়ান বলেন, যেহেতু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করে আমাকে অনুলিপি জমা দেন, সেহেতু উপরে কোন নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও তা গোপন রেখে গত ৩০ মার্চ প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ তার পছন্দের লোক দিদারুল ইসলামকে সভাপতি বানিয়ে পকেট কমিটি গঠন করে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন। ঐদিন সকলের উপস্থিতি স্বাক্ষরকে সভাপতি নির্বাচনের সম্মতি স্বাক্ষর হিসাবে চালিয়ে দেন। কমিটি গঠনের পূর্বে সদস্য ফরম সংগ্রহের প্রক্রিয়াতেও অনিয়ম করে প্রধান শিক্ষক নিজেই প্রত্যেক সদস্যের ফরম পূরণ করে নেন। এছাড়াও সভাপতি নির্বাচনের আগে কখনো কমিটির মিটিং কিংবা সভা আয়োজন করা হয়নি। বিষয়টি অভিযোগকারী নাজমুল আলম ছাড়াও খোদ সভাপতি দিদারুল ইসলাম ও কমিটির সদস্য জয়নাল সহ সকলেই। তবে একবার অভিভাবক সমাবেশ হলেও তা কখন কোন সময়ে হয়েছিল তা মনে নেই বলে জানান ম্যানেজিং কমিটির আরেক সদস্য মোবারেকা।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বিতর্কিত পকেট কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম একই ইউনিয়ন চাম্বলের আরেকটা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি প্রধান শিক্ষকের ইচ্ছায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেও, দাতা সদস্য কিংবা কোন ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক নন বলে নিশ্চিত করেন ঐ পকেট কমিটির সদস্যরা। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা আর না থাকা নিয়ে নির্দেশনা না থাকলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কোন ম্যানেজিং কমিটিতে থাকতে পারবে না বলে নিশ্চিত করেন জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রিটন কুমর বড়ুয়া ও সহকারী মনিটরিং কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ। এদিকে কোন দাতা কিংবা অভিভাবক না হয়েও একটা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে সভাপতি হওয়াটা চরম অনিয়ম বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু সুফিয়ান।
0 মন্তব্যসমূহ