জানা গেছে, উপজেলার গ্রাম ও স্টেশন মিলিয়ে প্রায় বেশকটি পয়েন্টে গাঁজা, ইয়াবা ও চোলাই মদ বিক্রি হয় নিত্যদিন। এ উপজেলা বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকা সহ কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বিভিন্ন কায়দায় হারহামেশা ঢুকছে এসব মাদক। বর্তমানে মাদকসেবীর মধ্যে স্কুল কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের তরুণদের সংখ্যা অত্যধিক। মাদকসেবীরা মাদকের অর্থ জোগাড় করতে প্রায়ই চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাচ্ছে।
এ উপজেলায় মাদক ব্যবসায় তৎপর রয়েছে প্রভাবশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের বাইরেও ব্যক্তি কেন্দ্রীক এ ব্যবসার রমরমা দিন যাচ্ছে এখন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুটিকয়েক দুষ্টচক্র সিন্ডিকেট ও ব্যক্তি বিশেষের এ মাদক ব্যবসাকে নানা ভাবে উৎসাহ দিচ্ছে। তাদের আস্কারা পেয়েই মাদক সিন্ডিকেট এখন আরো বেপরোয়া। দিন দিন এ ব্যবসায় নতুন মুখের আগমন ঘটছে। মার্কা মারা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরাই তাদের ব্যবসা বিস্তৃত করার পরিকল্পনায় নতুন মুখের কাছ থেকে অডেল টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসাকে বাড় বাড়ন্ত করছে।
এ কৌশলে সবচেয়ে বেশী এগিয়েছে উপজেলার কালীপুরস্থ গুনাগরি গ্রামের দীঘির পাড়া'র মৃত আজিজুল হকের পুত্র মাদক ব্যাপারী জাহাঙ্গীর আলম। এই জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘ যুগ ধরে বাঁশাখালীর মাদক ব্যবসা শাসন করছে। মাদকের মুকুটহীন সম্রাট জাহাঙ্গীর আলম পুলিশের একাধিক অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক দফা কারাবরণ করলেও এ ব্যবসা ছাড়াতে পারেনি। তার মাদক ব্যবসায় এ পর্যন্ত আইনি সংস্থার বড় কোন অভিযান হয়নি। মাদক সম্রাট জাহাঙ্গীর আলম তার এ ব্যবসার নিরাপত্তায় ঘাটে ঘাটে বিশ্বস্থ সোর্স থেকে শুরু করে আইনি সংস্থার কিছু অসাধু সদস্যদেরও ব্যবহার করে। তারা অভিযান কিংবা অন্য কোন ঝামেলার আগাম খবর মাদক সম্রাট জাহাঙ্গীর আলমকে অবগত করায় সতর্ক বার্তা পেয়ে মাদকের ডেরা থেকে নিরাপদে সরে পড়ে। এই ডেরায় শ্রমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মাদক সেবীদের সমাগম ঘটে। সন্ধ্যা হলেই মাদক ব্যবসার ঐ এলাকায় ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এলাকার লোকজন একাধিকবার আইনি প্রশাসন ও স্থানীয় ভাবে জাহাঙ্গীর আলমকে শায়েস্তা করতে মৌখিক ও লিখিত ভাবে অভিযোগ দিলেও এর কোন সুরহা হয়নি। তাদের নীরবতায় মাদক সম্রাট জাহাঙ্গীর আলম দিনের পর দিন তার অবৈধ মাদক ব্যবসায় আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহলের কেউ তার এ মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে মৃত্যুর হুমকি। সম্রাট জাহাঙ্গীর মাদক ব্যবসার পাশাপাশি কিছু সংখ্যক সন্ত্রসীও লালন-পালন করে। এরাই মাদক ব্যবসার প্রতিবাদকারীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে শুরু করে মৃত্যুর বার্তা পৌঁছায় বলে জানা যায়। বর্তমানে এই জাহাঙ্গীর তার কিছু কাছের স্বজনদের দিয়েও মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
গোপন সূত্রে প্রকাশ, মাদক সম্রাট জাহাঙ্গীর আলম'র বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মাদক ও মার্ডার সহ আরো বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। মরণ নেশা এই মাদকের আসক্তি হতে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান সহ জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানান এলাকায় বসবাস রত সর্বস্তরের সাধারণ জনগন।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই থানায় যোগদান করার পর থেকে পুরো এলাকায় কোথাই কি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তা জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এলাকায় মাদক ব্যবসা রোধে পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়াও কালীপুর এলাকায় জাহাঙ্গীর নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর তথ্য আমাদের কাছে আসছে, তাকে মাদক সহ হাতেনাতে আটক করার লক্ষ্যে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ