চসাস সভাপতি সৈয়দ দিদার আশরাফীর সভাপতিত্বে ও রাজীব দাস তুষারের সঞ্চালনায় আন্দোলনকারী সাংবাদিকরা হামলাকারী ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। বাঁশখালী থানা পুলিশ ভুক্তভোগীর পক্ষে বারবার মামলা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও মামলা না নেওয়ায় আন্দোলনরত সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তারা বলেন, মামলা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সময় অতিবাহিত করা হয়েছে। এমনটা উচিত নয়। যদি আগামী শুক্রবারের মধ্যে থানা পুলিশ মামলা না নেয় তাহলে আমরা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করব। সেই সাথে মামলা নেয়ার কথা বলে সময় বিলম্বের কারণে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে মামলা করব। কে কোথায় অনিয়ম করছে আমাদের সব জানা আছে। প্রয়োজনে আমরা থলের বিড়াল খুঁজে বের করব।
চসাস সাধারণ সম্পাদক ওসমান এহতেসাম বলেন, বাঁশখালী উপজেলার ৩নং খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন হায়দারের চাল চুরির দুর্নীতি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় সাংবাদিক গাজী গোফরানের বড় ভাই মোঃ বোরহান উদ্দিনের উপর অভিযুক্ত ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের নির্দেশে হামলা করে। এমনকি সাংবাদিকের মায়ের শাড়ি ধরে টানা হেচড়া করে। উল্টো তিনিই আবার টাকা ও মদদদাতাদের সুপারিশে সরকারি কাজে বাধার অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। যা ইউপি সদস্য নিজে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তুলে ধরেছেন। এমন অন্যায় হতে দেয়া যায় না। আমরা এই অপরাধের শাস্তি চাই। আমরা একদিনের আল্টিমেটাম দিলাম। যদি এই অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা না হয় আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সাংবাদিক গাজী গোফরান বলেন, তাদের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পরের দিন আমার ভাই বাজারে যাওয়ার সময় ওই ইউপি সদস্য তার পথ আটকে দেয়। জানতে চান, তোর ভাই কেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিউজ করেছে। আমার বড় ভাই এ বিষয়ে আমার সাথে কথা বলতে বললেই, তাকে বেধরক থাপ্পড় ও কিল ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে আত্ম রক্ষার্থে আমার ভাই ছুটাছুটি করলে তার গালে থাপ্পড় লাগে। আমার মতে, নিজেকে আত্মরক্ষা করা দোষের না। সবাই বাঁচতে চায়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, চসাস'র অন্যতম সংগঠক প্রণবরাজ বড়ুয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মানবকন্ঠ প্রতিনিধি ওমর ফারুক, সহ-সাংগঠনিক পলাশ কান্তি নাথ, অনুষ্ঠান সম্পাদক ঈসা মোহাম্মদ, বাংলাদেশ কৃষক আম জনতার মহাসচিব সাংবাদিক মনজুরুল আলম, দৈনিক জনবাণী প্রতিনিধি আইয়ুব মিয়াজী, সাংবাদিক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, চসাস সদস্য জিয়াউল ইসলাম জিয়া, সদস্য সেলিম রেজা, ক্রাইম রিপোর্টার আব্দুল মোমিন, কবি অভিলাষ মাহমুদ, সংগঠক মীর বরকত হোসেন, সাংবাদিক ওসমান জাহাঙ্গীর, হাফেজ আহমেদ, সাংবাদিক আব্দুল সাত্তার টিটু, চসাস সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ জামশেদ ও মোঃ সাজ্জাদ।
উল্লেখ্য, বাঁশখালী উপজেলার জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি চাল সঠিকভাবে বন্টন করা হচ্ছে কিনা তা দেখতে গত ১২ জুন সকালে খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে যান চট্টগ্রাম বাঁশখালী—১৬ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপি। যেখানে ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। এই অনিয়মের তথ্য পেয়ে গত ১৩ জুন সংবাদ প্রকাশ করে সরকার নিবন্ধিত জেএ টিভি প্রতিনিধি সাংবাদিক গাজী গোফরান। উক্ত সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত শুক্রবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় খানখানাবাদ জেলেপাড়া বাজার এলাকায় ইউপি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা মিলে গাজী গোফরানের বড় ভাই মোঃ বোরহান উদ্দিনের উপর হামলা করে। এমনকি ঘন্টা দুইয়ের ব্যবধানে পুরুষ শূন্য বাড়িতে প্রবেশ করে নিরুপায় নারীদের শাড়ি ধরে টানা হেচড়া করে ওই ইউপি সদস্য ও তার লোকজন। কিন্তু এ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করতে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে উল্টো ওই ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। পরে আবার সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নানা জনের তদবিরে রচিত মামলার কথাও স্বীকার করেন ওই ইউপি সদস্য। দাবি করেন, আরেকটু সময় পেলে অবস্থা খারাপ হতো।
0 মন্তব্যসমূহ