নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের বাঁশখালী বিভিন্ন অপরাধের জন্মদাতা উপজেলা প্রশাসন ড্রাইভার জুনাইদ। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়ে দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ গরীব নিরীহ অসহায়দের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির সহ নানান অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বাঁশখালী পৌরসভা ১নং ওয়ার্ডের ইমাম শরীফ এর পুত্র উপজেলা প্রশাসন ড্রাইভার জুনাইদ অসহায় ও নীরিহ মানুষের আতঙ্কের নাম জুনাইদ বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে অভিযুক্ত জনুাইদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ অভিযোগ না করলেও আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী বাঁশখালী পৌরসভাস্থ ৮নং ওয়ার্ডের মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র এয়াকুব আলীর থাকার বাড়ি ঘর ও কোন জমি না থাকায়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত গৃহহীন ও ভূমিহীন আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘর পাওয়ার জন্যে গত ২৩শে নভেম্বর ২০২৩ সালে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জমা দেন।
আবেদন কপি জমা শেষে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত জুনাইদ একই সময় ভুক্তভোগী এয়াকুবকে বলেন, এভাবে কত হাজার মানুষ আবেদন জমা দিয়েছে কিন্তু ঘর কয়জনে পেয়েছে? প্রসেসিং করতে জানলে অবশ্যই ঘর পাবি। অভিযুক্ত জুনাইদ আরো বলেন, ভূমি অফিসে অনেক জায়গায় খরচ আছে। অফিসে স্যারদের কমপক্ষে এক লক্ষ টাকা দিতে হবে। নচেৎ হাজার চেষ্টা করলেও ঘর পাবে না। পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তি বসবাস করার বুক ভরা আশা নিয়ে সরল মনে ইয়াকুব জুনাইদের কথা বিশ্বাস করে।
গত ২৯ শে নভেম্বর ২০২৩ সালে আমার জীবন জীবিকার একমাত্র বাহন অটোরিক্সা গাড়িটি বিক্রি করে অভিযুক্ত প্রশাসন ড্রাইভার জুনাইদকে আশি হাজার টাকা দিয়েছে বলে জানান ইয়াকুব। টাকাগুলো সু-কৌশলে হাতিয়ে নেওয়ার পর জুনাইদ তার সঙ্গে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে জুনাইদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে প্রতিবারই জুনাইদ বলে, তুই গৃহহীন ও ভূমিহীন এমনকি এতিমও। তুই ঘর না পেলে কে পাবে? তুই চিন্তা করিস না, ঘর অবশ্যই পাবি। আমি স্যারদের ম্যানেজ করেছি। স্যারকে ম্যানেজ করে আমি নিজেও ২টি ঘর পেয়েছি। ভুক্তভোগী এয়াকুব আরও বলেন, জুনাইদ ও তার পরিবার পরিজন গৃহহীন ও ভূমিহীন না হওয়া স্বত্বেও বাঁশখালী পৌরসভা মেয়র তোফাইল আহমেদ এর নিকট থেকে সু-কৌশলে জুনাইদের মায়ের নামে এক ভূয়া ভূমিহীন সনদ আদায় করে।
অভিযুক্ত জুনাইদ আমার নামে ঘর পাইয়ে দিবে বলে কথা থাকলেও ঐ ভুয়া সনদ ব্যবহার করে জুনাইদের মায়ের নামে ২৫নং ঘরটি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। বিষয়টি আমি বিশ্বস্থ কিছু মানুষের কাছে জানতে পেরে ৬ই আগষ্ট ২৫নং ঘরটিতে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে ঢুকে পরি। দূর্লোভে বশীভূত হয়ে ভূমিহীন পরিচয়ে জুনাইদের মায়ের নামে ঘর পাওয়ার পর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে আমাকে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে জুনাইদ টাকা গ্রহণের কথা অস্বীকার করে।
এবং আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনসহ ৫জনকে আসামী করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন চুরির মামলা দিয়ে জেলে পাঠায়। যাহা গেল ৫ই অক্টোবর বাঁশখালী থানায় ০৭নং মামলায় রেকর্ড হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জুনাইদ মুঠোফোনে জানায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫নং ঘরটি আমার মায়ের নামে রেজিষ্ট্রি হয়েছে।
তুমি তো ভূমিহীন নয়, তুমি ভূমিহীন বলে কিভাবে ঘর পেয়েছ তোমার মায়ের নামে? তুমি ভূমিহীন নয় রাইট কিনা? এসব প্রশ্নে জুনাইদ বলে, ঠিক আছে তো। মুঠোফোনে কথা বলার এক পর্যায়ে জুনাইদ নিজেই ভূমিহীন নয় বলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলার কৃতি সন্তান বাঁশখালী আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট বেলাল চৌধুরী বলেন, সুযোগ পেলে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন ড্রাইভার কেন? দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিওন ৪শ কোটি টাকার দূর্নীতি করেছে। আবার এ সময়ে এসে সেসব দূর্নীতিকে সংস্কার করছে বাংলাদেশ সরকার এর প্রধান উপদেষ্টা। আমি বলব, প্রকৃতপক্ষে প্রশাসন যদি সরেজমিনে উপজেলা প্রশাসন ড্রাইভার জুনাইদের পুরাতন ভিটি-বাড়ী ও বর্তমানে পাকাগৃহ নির্মানের চিত্র সঠিকভাবে তদন্ত করে ভূমিহীন নয় প্রমাণিত হলে ঘরটির জুনাইদের মায়ের নাম বাতিল করে সংস্কার করা প্রয়োজন এবং ভুক্তভোগী এয়াকুবের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে প্রশাসন ঘরটি তার নামে বরাদ্দ দিলে প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব হবে। তাছাড়া জুনাইদ ভূমিহীন না হওয়া স্বত্বেও যদি বাঁশখালী পৌরসভাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সু-কৌশলে ভূীমিহীন সনদ আদায় করে থাকে তবে তাকে সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় আনা-ই হবে প্রশাসনের একমাত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এর কাছে মুঠোফোনে যে ব্যক্তি ভূমিহীন নয় যদি সে আশ্রয়ন প্রকল্প হতে কৌশলে ঘর বরাদ্দ পায় তার ঘর বাতিল করে পূণরায় সংস্কার করা প্রয়োজন কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রমাণিত হলে গৃহহীন ও ভূমিহীন না হয়েও কেউ আশ্রয়ণ প্রকল্প হতে ঘর বরাদ্দ নিয়েছে, সে যেই হোক তার ঘর অবশ্যই বাতিল করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ